মসজিদ সংস্কারে গড়িমসি এফডিসি কর্তৃপক্ষের
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/04/12/photo-1523528453.jpg)
এফডিসিতে নতুন মসজিদ গড়ার জন্য পুরোনো মসজিদটি ভাঙা হয়েছে; কিন্তু প্রায় এক বছর হয়ে গেলেও নতুন মসজিদ নির্মাণের কোনো লক্ষণ নেই। এতে নামাজ পড়তে কষ্ট হচ্ছে মুসল্লিদের।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এফডিসির মসজিদে মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ‘মসজিদ একটা পবিত্র স্থান, এক বছর ধরে মসজিদটি ভাঙা। ঠিক করার কোনো লক্ষণ নেই। এখন বৃষ্টি শুরু হয়েছে, পানি ভেতরে চলে আসে। সামনে আরো বৃষ্টি বাড়বে, কীভাবে নামাজ পড়ব বুঝতে পারছি না।’
নতুন মসজিদ নির্মাণে এফডিসির কোনো অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে না। থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা এই মসজিদ নির্মাণের অর্থ দিচ্ছেন। তাঁরই ঘনিষ্ঠজন অভিনেতা সনি রহমান বলেন, ‘আমার বাড়ি নরসিংদী জেলায়। সে হিসেবে দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা আমার কাছের মানুষ। উনি এই পর্যন্ত সারা দেশে তিন শতাধিক মসজিদ করেছেন। আমি চলচ্চিত্র পরিবারের পক্ষ থেকে নায়ক ফারুক ভাইসহ উনার কাছে যাই এবং এফডিসির জন্য একটি মসজিদের আবেদন করি। উনি রাজি হয়ে দুই কোটি টাকা দিয়ে এফডিসিতে মসজিদ তৈরি করে দিতে রাজি হন এবং বেশ কিছুদিন আগে ডিজাইনও ফাইনাল করা হয়। কিন্তু সবকিছু রেডি থাকার পরও এখনো এমডির পক্ষ থেকে কাজের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। আবদুল কাদির মোল্লা সাহেব প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময় মসজিদের জন্য দান করেন এবং নিজের লোক দিয়ে কাজ করান। এখন যদি এই বছরের সময়টা পার হয়ে যায়, তখন আরো এক বছর আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’
বিষয়টি নিয়ে নায়ক ফারুক বলেন, ‘এর আগে যিনি এমডি ছিলেন, তপন কুমার ঘোষ, তিনি বিষয়টি নিয়ে অনেক খুশি হয়েছিলেন এবং এফডিসির বর্তমান মসজিদটি ভাঙা শুরু করেছিলেন। এখন নতুন এমডি আমির হোসেন আসার পর বিষয়টি নিয়ে টালবাহানা শুরু হয়েছে। আমার মনে হয়, তিনি চাইছেন না, উনারা কাজটি করে দিক। টাকাটা দিয়ে দিলে হয়তো এমডি সাহেব কাজ শুরু করতেন, এতে করে কিছু লাভও হতো। আমি এমডি সাহেবকে বলতে চাই, আমরা একটা মানুষের কাছে হাত পেতে একটা মসজিদ আনছি, দুই কোটি টাকার একটা মসজিদ দিচ্ছেন তিনি, এমনকি নিজের আর্কিটেক্ট দিয়ে ডিজাইন করিয়ে দিয়েছেন, উনার লোক দিয়ে কাজটি করাবেন। এখানে আপনি কেন টালবাহানা করছেন। এখন যদি কাদির মোল্লা সাহেব আর মসজিদটি না করে দেন, তা হলে কত বছর লাগবে সরকার থেকে টাকা নিয়ে একটি মসজিদ বানাতে, কে জানে? এখন মসজিদটি ভাঙা, নামাজ পড়তে সমস্যা হচ্ছে। ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার জন্য আসলে এমন বিলম্ব করা হচ্ছে।’
এফডিসির এমডি আমির হোসেন মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখানে আমি বললেই তো আর হবে না, আমাদের একটা বোর্ড আছে, সেখান থেকে অনুমতি লাগবে। আর আমি কেন এখান থেকে টাকা কামাই করতে চাইব, সরকারি জায়গায় কাজ করতে গেলে কিছু নিয়ম মেনে করতে হয়, যে কারণে দেরি হচ্ছে।’
মসজিদ ভাঙা হয়েছে এক বছর হতে চলল। এখন বৃষ্টির কারণে নামাজ পড়া যাচ্ছে না। অনুমোদন হতে এত সময় লাগে কি না জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘সরকারি কাজে একটু সময় লাগবেই। তবে আমি সব ফাইল রেডি করে দিয়েছি। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে অনুমোদন হয়ে যাবে। আর মসজিদে নামাজ পড়া যাচ্ছে না, এটা ঠিক নয়। যারা নামাজ পড়ার, তারা ঠিক পড়ছে।’