জিম্মিদশা থেকে ফিরে যা বললেন শ্যামল মাওলা

ছোটপর্দার নির্মাতা আজাদ কালামের ‘মেঘ মায়া’ নাটকের শুটিং করতে গিয়ে নেত্রকোনায় জিম্মি অবস্থার মধ্যে পড়েন অভিনয়শিল্পী শ্যামল মাওলা ও প্রসূন আজাদসহ পুরো শুটিং ইউনিট। গতকাল ডিরেক্টর্স গিল্ডের সহযোগিতায় শ্যামল ও প্রসূন ঢাকায় পৌঁছেছেন। ঢাকায় ফিরে জিম্মি অবস্থার কথা এনটিভি অনলাইনকে জানান শ্যামল মাওলা।
শ্যামল বলেন, ‘আমরা আসলে তিনটি কাজের উদ্দেশ্য নিয়ে নেত্রকোনার বিরিশিরি যাই। অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চল, রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব ভালো নয়। সেখানে আমরা ২৪ তারিখ রাতে যাই এবং ২৫ তারিখ থেকে শুটিং শুরু করি। আমাদের কাজের প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। শুটিং করতে হয়েছে বৃষ্টির সাথে তাল মিলিয়ে। যে কারণে প্রথম কাজটি করতেই তিন দিন লেগে যায়। তারপর অন্য কাজ শুরু করার জন্য শিল্পীদের শিডিউল নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। কিছুতেই আমাদের সহশিল্পীদের শিডিউল মেলানো যাচ্ছিল না। তখন সিদ্ধান্ত হয়, আমরা ঢাকায় ব্যাক করব। এরই মধ্যে শুনতে পাই, ইউনিটে টাকার সমস্যা আছে। প্রযোজক টাকা পাঠাননি। যাই হোক আমরা রিসোর্টে যাই, সেখানে গিয়ে ঢাকায় ফেরার জন্য প্রস্তুত হই। তখন আমাদের বাধা দেওয়া হয়। তারপর নাটকের পরিচালক এসে নিজে দায়িত্ব নেন। আমরা সেখান থেকে কোনোভাবে বের হয়ে আসি, বাসস্ট্যান্ডে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে নতুন সমস্যায় পড়ি। শ্রমিক ইউনিয়নের একটা অফিস আছে, সেখানেও আমাদের বাধা দেওয়া হয়। তাদের সাথে নাকি লেনদেন আছে, সেটাও ক্লিয়ার করা হয়নি। তারপর আমরা আবারও রিসোর্টে যাই। এবং ডিরেক্টর্স গিল্ড ও নাটকের পরিচালকের সহযোগিতায় গতকাল ঢাকায় আসি।’
এর আগে প্রসূন আজাদ নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন, পরিচালককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন পরিচালক কোথায় ছিলেন, জানতে চাইলে শ্যামল বলেন, ‘আসলে পরিচালক সারা দিন শুটিং করে একসময় তার মোবাইলে চার্জ চলে যায়। আমরা যখন রিসোর্ট থেকে বের হই, তখন পরিচালক আমাদের সাথে ছিলেন। তারপর যখন শ্রমিক ইউনিয়ন আমাদের ঢাকা ফিরতে বাধা দেয়, তখন পরিচালককে ফোন দিয়ে আমরা পাচ্ছিলাম না। ঠিক এই সময়ই একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, তখনই স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন প্রসূন।’
গত ২৫ মে শুক্রবার ‘মেঘ মায়া’ নাটকের শুটিং হয় নেত্রকোনার বিরিশিরিতে। সেখানে শ্যামল মাওলা ও প্রসূন আজাদসহ বেশকিছু অভিনয় শিল্পী অভিনয়ে অংশ নেন। তিন দিন শুটিং করার পর গত রোববার দিবাগত রাতে তাদের ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু নির্মাতা হোটেল ভাড়া, গাড়িভাড়া, শিল্পীদের পাওনা না দেওয়ায় গণ্ডগোল বাধে।
বিষয়টি নিয়ে গত রোববার অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লিখেন, ‘রাগে কান্না আসতেছে, ৩ দিন ধরে শুটিং, হোটেল ট্রান্সপোর্ট শিল্পী কোনো কিছুর পেমেন্ট করা হয় নাই। পরিচালককে কেউ পাচ্ছে না। প্রযোজক নাকি টাকা পাঠায় নাই। এখন এই রাত ১টা পর্যন্ত ড্রাইভারদের যে সমিতি ওরা ইউনিটের গাড়ি একটা রেখেছে। খুব হেলপলেস অবস্থা, আমার শরীর ভালো না। ইমার্জেন্সি এমবুলেন্স ও গুগল করে পাচ্ছি না। আব্বু কল রিসিভ করল না। আমি আসলে জানি না কী হচ্ছে। সিকিউরিটি নাই কোনো।’