ছবি প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে আসছে নতুন পদ্ধতি

‘আমরা প্রথমে দুটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছি- ‘আমি তোমার হতে চাই’ ও ‘চল পালাই’। এই দুটি ছবি মুক্তি দিতে গিয়ে আমাদের মনে হয়েছে এখন চলচ্চিত্র প্রযোজনা করে টাকা ওঠানো অনেক কষ্টকর। কারণ ছবি নির্মাণ করার পর মুক্তি দেওয়ার সময় মূল সমস্যাটা দেখা দেয়। ১০০ সিনেমা হলে ছবি মুক্তি দিতে গেলে একজন প্রযোজকের বাড়তি গুনতে হয় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা। তা দিতে হয় শুধু ছবিটি প্রদর্শনের জন্য। এ ছাড়া সিনেমা হলের পরিবেশটাও আরো সুন্দর হওয়া প্রয়োজন। এমন অবস্থায় আমরা সিনেমা হলের উন্নয়নে কাজ শুরু করেছি। এতে করে প্রযোজকদের বাড়তি টাকা গুনতে হবে না এবং সঠিক হিসাব পাবেন সবাই, কোন সিনেমা থেকে কত টাকা ব্যবসা করল, সবকিছুই থাকবে স্বচ্ছ।’ এনটিভি অনলাইনকে এভাবেই নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানাচ্ছিলেন লাইভ এসকে টেকনোলজিসের পরিচালক ইয়াসির আরাফাত।
বিনামূল্যে সিনেমা হলের উন্নয়নে কাজ করবেন জানিয়ে আরাফাত বলেন, ‘আমরা সিনেমা হলে স্থাপন করতে যাচ্ছি ডিজিটাল সিনেমা প্রজেকশন সিস্টেম। আমাদের লাইভ এস কে টেকনোলজিস বাংলাদেশের সব সিনেমা হলে বিনা মূল্যে সর্বাধুনিক প্রজেক্টর, সাউন্ড ও সার্ভার মেশিন বিতরণ শুরু করেছে। এমন কি মহিলাদের জন্য আলাদা আসন ও টয়লেটের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। প্রথমে সার্ভার সিস্টেম বিতরণের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে শর্ত সাপেক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রজেক্টর ও সাউন্ড সিস্টেম বিতরণ করা হবে।’
এতে করে সিনেমার প্রযোজরা কীভাবে লাভবান হবেন জানতে চাইলে আরাফাত বলেন, ‘এখন একটি সিনেমা হলে ছবি মুক্তি দিতে গেলে একজন প্রযোজকের প্রত্যকটা সিনেমা হলের জন্য প্রজেক্টর ভাড়া দিতে হয় ৭ হাজার টাকা। সেই সিনেমা হলের প্রত্যেকটা টিকেট থেকে দিতে হয় তিন টাকা। আবার কত টাকা বিক্রি হলো সেটা দেখার জন্য প্রত্যকটা সিনেমা হলে আলাদা লোক পাঠাতে হয়। এতে করে একটি সিনেমা হলে প্রযোজকের বাড়তি খরচ হয় ১৫ হাজার টাকার মতো। ১০০ সিনেমা হলে ছবি মুক্তি গেলে ১৫ লাখ আর টিকেটের তিন টাকায় আরো ধরেন ১০ লাখ, মোট ২৫ লাখ টাকা খরচ হয়ে যায় প্রযোজকের শুধু ছবি দেখানোর জন্য। সেখানে আমরা নিচ্ছি এককালীন ৫০ হাজার টাকা মাত্র। এতে করে বাকি টাকাটা প্রযোজকের বেঁচে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, পরের সপ্তাহে বা পরে যেকোনো সময় এই ছবিটি যদি কোনো সিনেমা হল প্রদর্শন করতে চায়, সেক্ষেত্রে ছবির প্রযোজককে কোনো টাকা দিতে করতে হবে না। আর সাথে আছে ই-টিকেটিং। এতে করে কত টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে, এ নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না। ঘরে বসেই প্রযোজক জানতে পারবেন এই সিনেমা হলে আজ কোনো শো হবে, আর কত টাকা বিক্রি হয়েছে।’
প্রতিষ্ঠানের আরেক পরিচালক তামজিদ-উল-আলম অতুল জানান, বিদেশি চলচ্চিত্র বা যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রের জন্য তারা একটু বেশি টাকা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে আমরা চার্য নেব দুই লাখ টাকা। কারণ আমরা চাই সবার আগে দেশি চলচ্চিত্র মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। এমনকি আমরা নিজেরাও নিয়মিত চলচ্চিত্র প্রযোজনা করতে চাই। তার আগে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জায়গা তৈরি করছি।’