রাজ্জাকের নামে প্রতিষ্ঠান চান ববিতা

‘বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদপুরুষ নায়করাজ রাজ্জাক। আমার পরম শ্রদ্ধেয় এই মানুষটি চলে গেছেন মহাকালের পথে। কিংবদন্তি এই শিল্পী স্বাধীনতা পদক, আজীবন সম্মাননাসহ অসংখ্য পুরস্কার ও মানুষের ভালোবাসায় হয়ে উঠেছিলেন সবার অতি আপনজন। এই মহানায়কের নামে একটি ইনস্টিটিউট বা রাজ্জাক ফিল্ম আর্কাইভ নামকরণ করার জন্য আমি আবেদন জানাচ্ছি।’ গতকাল রোববার জাতীয় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা পেয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশের সময় এসব কথা বলেন ববিতা।
গতকাল ৮ জুলাই রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬’ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৫টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এ সময় নায়ক ফারুক ও ববিতাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ববিতা বলেন, ‘একজন শিল্পী নিজের কথা ভুলে হাসি আর কান্না দিয়ে আজীবন সবাইকে মুগ্ধ করেন। অথচ সেই শিল্পী জীবনের শেষ বেলায় এসে বাসস্থান ও চিকিৎসার জন্য অসহায় হয়ে পড়েন। শিল্পীদের জন্য চিকিৎসা ও স্বল্পমূল্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য আপনার (প্রধানমন্ত্রী) নিকট আবেদন করছি।’
বর্তমান প্রজন্মের শিল্পীদের নিয়ে ববিতা বলেন, ‘এখন যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের আরো বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত। আমি অনেক তরুণ শিল্পীর মধ্যে সম্ভাবনা দেখেছি। যাদের সঠিকভাবে পরিচর্যা করা হলে বাংলাদেশ বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গনে এগিয়ে যাবে।’
পুরস্কার নিয়ে ববিতা বলেন, ‘আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। দেশে-বিদেশে পুরস্কার আর মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি, তা নিয়ে জীবনের শেষ দিনটি অতিক্রম করতে চাই। আমার এই পুরস্কার আমার ভক্তদের উৎসর্গ করলাম।
একনজরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬
১. আজীবন সম্মাননা : যৌথভাবে ববিতা ও ফারুক।
২. শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র : অজ্ঞাতনামা (ফরিদুর রেজা সাগর)
৩. শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র : ঘ্রাণ (এস. এম. কামরুল আহসান)
৪. শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র : জন্মসাথী (একাত্তর মিডিয়া লিমিটেড ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর)
৫. শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক : অমিতাভ রেজা চৌধুরী (আয়নাবাজি)
৬. শ্রেষ্ঠ অভিনেতা প্রধান চরিত্রে : চঞ্চল চৌধুরী (আয়নাবাজি)
৭. শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্রে : যৌথভাবে তিশা (অস্তিত্ব) ও কুসুম শিকদার (শঙ্খচিল)
৮. শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রের : যৌথভাবে আলী রাজ (পুড়ে যায় মন) ও ফজলুর রহমান বাবু (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
৯. শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রের : তানিয়া আহমেদ (কৃষ্ণপক্ষ)
১০. শ্রেষ্ঠ অভিনেতা/ অভিনেত্রী খল চরিত্রে : শহীদুজ্জামান সেলিম (অজ্ঞাতনামা)
১১. শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী : আনুম রহমান খান সাঁঝবাতি (শঙ্খচিল)
১২. শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক : ইমন সাহা (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
১৩. শ্রেষ্ঠ গায়ক : ওয়াকিল আহমেদ (অমৃত মেঘের বারি, চলচ্চিত্র : দর্পণ বিসর্জন)
১৪. শ্রেষ্ঠ গায়িকা : মেহের আফরোজ শাওন (যদি মন কাঁদে, চলচ্চিত্র : কৃষ্ণপক্ষ)
১৫. শ্রেষ্ঠ গীতিকার : গাজী মাজহারুল আনোয়ার (বিধিরে ও বিধি, চলচ্চিত্র : মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
১৬. শ্রেষ্ঠ সুরকার : ইমন সাহা (বিধিরে ও বিধি, চলচ্চিত্র : মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
১৭. শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার : তৌকীর আহমেদ (অজ্ঞাতনামা)
১৮. শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার : যৌথভাবে অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম (আয়নাবাজি)
১৯. শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা : সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন (আন্ডার কনস্ট্রাকশন)
২০. শ্রেষ্ঠ সম্পাদক : ইকবাল আহসানুল কবির (আয়নাবাজি)
২১. শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক : উত্তম গুহ (শঙ্খচিল)
২২. শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক : রাশেদ জামান (আয়নাবাজি)
২৩. শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক : রিপন নাথ (আয়নাবাজি)
২৪. শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা : যৌথভাবে সাত্তার (নিয়তি) ও ফারজানা সান (আয়নাবাজি)
২৫. শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান : মানিক (আন্ডার কনস্ট্রাকশন)