শিল্পকলা একাডেমিতে চীনা নববর্ষ উদযাপন
চীনাদের জন্য চীনা নববর্ষ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী উৎসব। চার হাজার বছরের প্রাচীন এ উৎসব বসন্ত উৎসব নামেও পরিচিত। গতকাল ১৭ জানুয়ারি ছিল চীনের নববর্ষ। চীনা সংস্কৃতির প্রকাশ হিসেবে চীনা নববর্ষ বিশ্বব্যাপী একটি আলাদা মঞ্চে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর বিশ্বের ১৩০টি দেশের ৪০০ শহরে এই উৎসব পালিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমিতে চীনা নববর্ষ ২০১৯-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠান করা হয়।
এর আয়োজন করেছে বাংলাদেশে চীনের দূতাবাসসহ চীনের ইউনান প্রদেশের সংস্কৃতি এবং পর্যটন বিভাগ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী কেন্দ্র। এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত মিস্টার ঝ্যাং ঝু, বাংলাদেশের সংস্কৃতি সচিব রোক্সানা মালেক।
এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত মিস্টার ঝ্যাং ঝু বলেন, ‘চীনা নতুন বছর সামনে রেখে চীনের বাংলাদেশ দূতাবাস চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী কেন্দ্র আজকের গালা নাইট আয়োজন করেছে, যাতে আমরা আমাদের বাংলাদেশি বন্ধুসহ অন্যান্য দেশের বন্ধুদের সঙ্গে এই আনন্দময় মুহূর্ত ভাগাভাগি করতে পারি। চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে থাকা চীনের নাগরিক আর বাংলাদেশের জনগণকে শুভ নববর্ষ জানাই। আমি ইউনান শিল্প দলকে স্বাগত জানাই, যারা বহুদূর ভ্রমণ করে এ দেশে এসেছে। বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং অন্য যেসব বন্ধু আমাদের এই অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতা করেছেন এবং ইউনান শিল্প দলকে আতিথেয়তা প্রদান করেছেন, তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, “চীনা লোকজ সংস্কৃতির সঙ্গে এর দৃঢ় আবেগী বন্ধন রয়েছে। চীনা চিরায়ত সংস্কৃতিরও এটি উজ্জ্বলতম উদাহরণ। চীনা একটি প্রবাদে বলা হয়েছে, ‘একটি ভালো বছর একটি ভালো বসন্তের শুরুর ওপর নির্ভরশীল।’ নতুন বছর মানে নতুন শুরু। নতুন বছর মানে নতুর আশার সঞ্চার হওয়া। ভালো বসন্ত এবং ভালো জীবনের জন্য মানুষের আকাঙ্ক্ষা দেশ, জাতি এবং জাতীয়তায় সীমাবদ্ধ থাকে না। চীনা সংস্কৃতির প্রকাশ হিসেবে চীনা নববর্ষ বিশ্বব্যাপী একটি আলাদা মঞ্চে পরিণত হয়েছে।”
সংস্কৃতি সচিব রোক্সানা মালেক বলেন, ‘বাংলাদেশ চীন মৈত্রীর বন্ধন আরো শক্তিশালী হলো। জনগণের বন্ধুত্বই রাষ্ট্রীয় মিত্রতার মূল চাবিকাঠি। সাংস্কৃতিক সম্পর্কের মাধ্যমেই চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব আরো সুদৃঢ় হবে।’
অনুষ্ঠানে হাজারো দর্শকের ভেতর উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী ও কূটনৈতিক কর্মকর্তারা। এ সময় তাঁরা ইউনান এথনিক ভিলেজ পালাটিউ আর্ট ট্রুপ এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির অ্যাক্রোবেটিক দলের একটি যৌথ পরিবেশনা উপভোগ করেন। এ ছাড়া ইউনান প্রদেশের সাংস্কৃতিক সামগ্রীর প্রদর্শনী এবং একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। দুই ঘণ্টার মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা করা হয়। বাংলাদেশে চীনা নববর্ষ উদযাপনে চীনা দূতাবাস নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোতে এটি পর্যায়ক্রমে আয়োজন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সিনেমা উৎসব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী চীনা পোশাক প্রদর্শনী এবং কক্সবাজারে ঘুড়ি উৎসব।