ওষুধে কি সিজোফ্রেনিয়া ভালো হয়?
অনেকেই সিজোফ্রেনিয়া বা জটিল মানসিক রোগে ভুগছেন। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে সিজোফ্রেনিয়ার কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে সিজোফ্রেনিয়ার কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানিয়েছেন স্কয়ার হাসপাতালের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. মুনা তাহসিন।
সিজোফ্রেনিয়া কি ভালো হয়, এর চিকিৎসাই বা কী; সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, সিজোফ্রেনিয়া যদিও জটিল একটি রোগ, কিন্তু ২৫ ভাগ ভালো হয়ে যায় চিকিৎসায়। একবারই চিকিৎসা করবেন, ২৫ ভাগ ভালো হয়ে যাবে। সুতরাং এটি পজিটিভ দিক, আশার দিক। চিকিৎসার খুব সুন্দর পদ্ধতি আছে। চিকিৎসা পদ্ধতিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়—বায়ো, সাইকো ও সোশ্যাল। বায়োলজিক্যাল চিকিৎসা, সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা এবং সোশ্যাল চিকিৎসা।
অধ্যাপক ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বায়োলজিক্যাল চিকিৎসাই মূল চিকিৎসা। ওষুধ দিয়ে আমরা চিকিৎসা করি। আমরা আগেই বলেছি নিউরোকেমিক্যালসের কথা, নিউরোট্রান্সমিটারের কথা; যেটা ব্যত্যয় ঘটে ডোপামিন; তাহলে ডোপামিনটা যদি কারেক্ট করতে পারি, সিজোফ্রেনিয়া ভালো হয়ে যাবে। সিজোফ্রেনিয়াতে খুব ডিপ্রেশন থাকে, হতোদ্যম থাকে, হতাশ থাকে, সেরোটিন নাম আরেকটি কেমিক্যালসের প্রবলেম হয়। তাহলে সেই কেমিক্যালস যদি আমরা ঠিক করে দিতে পারি, তাহলে ভালো হয়ে যাবে। সুতরাং ওষুধ দিয়ে সিজোফ্রেনিয়া রোগীকে ভালো করা যেতে পারে।
অধ্যাপক ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলাম যুক্ত করেন, ওষুধ নিয়ে মানুষের ভীতি আছে, ভুল ধারণা আছে। বলে যে সিজোফ্রেনিয়ার ওষুধ খেলে সারাক্ষণ ঘুমাবে। না। আজকাল অনেক সুন্দর সুন্দর ওষুধ আবিষ্কার হয়েছে। সারাক্ষণ ঘুমাতে হবে না। সে অফিসে যেতে পারবে, স্কুল-কলেজে যেতে পারবে, ওষুধও খেতে পারবে। সেই ব্যবস্থা আছে। আবার সিজোফ্রেনিয়াতে কিন্তু ঘুমের ডিস্টার্বেন্স প্রকট থাকে। ঘুম হয় না। তখন তাকে ঘুমও পাড়াতে হবে। অনেক সময় সে খুব উত্তেজিত থাকে, খুব রাগারাগি করে, খুব মারামারি করতে চায়, গালাগালি করতে চায়, তখন তাকে তো থামাতে হবে। সেই ওষুধও কিন্তু আছে। সুতরাং ওষুধ দিয়ে সিজোফ্রেনিয়া ভালো করে চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু আমরা যেটা ভুল করি, একমাস চিকিৎসা করলাম, রোগী মোটামুটি ভালো হয়ে গেল, তখন ওষুধ বন্ধ করে দিই। এটা আরেকটা ভুল। সুতরাং চিকিৎসাটা যেন চিকিৎসকের পরামর্শমতো চালিয়ে যাওয়া হয়।
সিজোফ্রেনিয়ার কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওতে ক্লিক করুন।