বয়স্ক মানুষের পুষ্টিকর খাবার
বয়স্ক নারী-পুরুষের পুষ্টির গুরুত্ব অনেক বেশি। এ সময়ে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের অনেকের মধ্যে বিভিন্ন রোগবালাইও লক্ষ্য করা যায়। তাই খুব সতর্কতার সঙ্গে এই বয়সে পুষ্টির বা পরিমিত খাবার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হয়। এ সময় শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দেয়। তাই এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য সঠিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানে বয়স্ক মানুষের পুষ্টিকর খাবার প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বারডেম হাসপাতালের সিনিয়র পুষ্টি ও পথ্য বিশেষজ্ঞ ডা. শামছুন্নাহার নাহিদ।
সাধারণত ৬০ বছরের ওপরে চলে গেলে সবাই বলে থাকে এরা কর্মঠ না। আস্তে আস্তে যত বয়স বাড়তে থাকে, পরিবারের লোকজন তাদের থেকে দূরে সরে যায়। ফলে বয়স্করা মনে করেন, তাদের চাহিদা অনুযায়ী কোনো কিছুই সন্তানরা পূরণ করতে পারছে না। এই বয়সে আরেকটি বড় বিষয়টি হচ্ছে—একটি মানুষের শরীরের চাহিদা, খাবারের চাহিদা এবং খাবার খাওয়ার পর হজমের ধারাবাহিকতার কিছুটা ঘাটতি থাকে। অর্থাৎ, যে মানুষটা প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় সব ধরনের খাবার খেতে পারত, বয়স হয়ে গেলে তিনি আর সব ধরনের খাবার গ্রহণ করতে পারেন না।
সাধারণত লক্ষ্য করা যায়, এই বয়সে প্রচুর পরিমাণ রোগ বা খারাপ অবস্থা হয়। যেমন : কারও ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, প্রেসারের সমস্যা হতে পারে। আবার পাকস্থলীর কিছু সমস্যা হতে পারে। খাবার খেলে বমি ও অরুচি হয়। অর্থাৎ, উপদাহী অন্ত্র সংলক্ষণ বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস), কিছু গ্যাস্ট্রিক বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাও থাকে। তাই এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে বয়স্ক মানুষের জেনেটিক ডায়েট খুব গুরুত্বপূর্ণ।
এমনভাবে ডায়েট করতে হবে যে, বয়স্কদের সারা দিনের ক্যালরি অনুযায়ী, খাবার চাহিদা পূরণ করতে পারেন। এমন খাবার হতে হবে, যতটা সম্ভব অল্পতে তার শরীর যেন গ্রহণ করতে পারে। অর্থাৎ, কম মসলা জাতীয় খাবার ও স্বাভাবিক খাবার দিতে হবে। তবে, অবশ্যই তার পছন্দ অনুযায়ী খাবার হতে হবে।
বয়স্ক ব্যক্তির রোগ ও রিপোর্ট অনুযায়ী খাবার দিতে হবে। বয়স্ক অবস্থায় শরীরে ফ্যাট ডিপোজিশনের (চর্বি জমা) রেট খুব বেশি থাকে। সাধারণত স্যাচুরেটেড ফ্যাটকে শরীরের জন্য ক্ষতিকর মনে করা হয়ে থাকে। এজন্য স্যাচুরেটরি ফ্যাট যেমন : খাসি, গরুর মাংস, ঘি, বাটার, মেয়নেজ ও মার্জারিন এড়িয়ে চলতে হবে। আবার কারও প্রেসার বেশি থাকলে চিজ, পনির ও সল্ট জাতীয় খাবারগুলো একদম বাদ দেওয়া উচিত।
তাদের ক্ষেত্রে কিংবা ব্যক্তি অনুযায়ী দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা পর পর অল্প অল্প করে দিনে সাত থেকে আট বার খেতে দেওয়া যায়, তাহলে তাদের পাকস্থলী নিরাপদ থাকে। খুব ধারাবাহিকভাবে তিনি যে খাবারটা গ্রহণ করছেন, সে খাবারটা খুব সহজে হজম হয়ে যাচ্ছে। এভাবে যদি বাবা-মা কিংবা পরিবারের অন্য বয়স্কদের প্রতি একটু খেয়াল বা যত্ন করলে তাদের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে এবং তারা কর্মঠও থাকবে। যদি তার প্রতিদিনের চাহিদা যদি পূরণ করতে পারেন, তাহলে সেটা সবচেয়ে ভালো হবে। এতে তার রোগ এবং রিপোর্ট ঠিক রাখতে পারবেন। তাহলে খুব সহজে একটি বয়স্ক মানুষ বিছানায় পড়ে যাবে না।
বয়স্ক মানুষের পুষ্টিকর খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ওপরের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।