রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আমের উপকারিতা
পুষ্টিগুণের কারণেই ইতোমধ্যে আম অনেকের কাছে প্রিয় ফল । আবার অনেকের ধারণা আম ওজনও বাড়ায়। প্রিয় ফল হওয়া সত্ত্বেও এটি পরিমিত পরিমাণে খেয়ে থাকেন অনেকেই। আম স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে আমের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে কথা বলেছেন ইউনাইটেড হাসপাতাল প্রধান পুষ্টিবিদ ডা. চৌধুরী তাসনীম হাসিন।
আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ডা. চৌধুরী তাসনীম হাসিন বলেন, আম অত্যন্ত সুস্বাদু একটি মৌসুমী ফল। ছোট বড় সকলেরই অত্যন্ত প্রিয় ফল আম। আমের খাদ্য উপাদান ও খাদ্যগুণাবলী অপরিসীম। এটা এমনই একটি ফল, যার খাদ্যগুণাবলী গুণ আমাদের শরীরে সারাবছর সরংক্ষণ থাকে। এক টুকরা মাঝারি সাইজের আম থেকে আমরা আমাদের দৈনন্দিন চাহিদার এক চতুর্থাংশ ভিটামিন ‘সি’ এবং দুই তৃতীয়াংশ ভিটামিন ‘সি’ পেয়ে থাকি। এ ছাড়া আমে আছে ভিটামিন কে, ই, আয়রন ও পটাশিয়াম। আম অত্যন্ত একটি আঁশবহুল ফল। এ কারণে কার্ডিয়াক রোগী বা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সীমিত মাত্রায় আম খুবই উপযোগী একটি ফল। অত্যন্ত আঁশ থাকার কারণে আম আমাদের রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
এ ছাড়া বিভিন্ন রোগ; যেমন- কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি, গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি রোগ নিয়ন্ত্রণে আম যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। আমে প্রচুর পরিমাণ আয়রণ ও ভিটামিন ‘সি’ থাকার কারণে রক্ত শূন্যতা রোধে আমের ভূমিকা অতুলনীয়। এমনকি আমাদের যে সকল শিশুদের একটু মেমোরি লস আছে অথবা যারা পড়াশোনায় মনযোগী নয়, তাদের মনযোগ বৃদ্ধিতে আম যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে।
আমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কে ডা. চৌধুরী তাসনীম হাসিন পোস্ট-মেনোপজালদের জন্য অর্থাৎ আম ৪০ থেকে ৪৫ বছর ঊর্ধ্ব মহিলাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী একটি ফল, যা তাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া আমে আছে অ্যান্টি অক্সিজেন। যা আমাদের শরীরে ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
দৈনন্দিন একজন সুস্থ নন-ডায়াবেটিস রোগীর অন্তত দুটো মাঝারি সাইজের আম খেতে পারেন। ডায়াবেটিস রোগীরাও আম খেতে পারবেন, তবে তাদের জন্য পরামর্শ হলো- আমটি খেতে হবে দিনের বেলায়। সূর্য ডোবার পরে অোম খাওয়া যাবে না। অবশ্যই সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে যেকোনো মিষ্টি জাতীয় ফল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কারণ দিনের বেলায় আম খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম ওঠে। সকালের নাস্তা অথবা দুপুরের খাবারের সাথে আম খেতে হবে।
আমের পটাশিয়াম হাইপারটেনসিভ রোগীদের জন্য যথেষ্ট সহায়ক। এমনকি কিডনি রোগী যাদের পটাশিয়ামের মাত্রা কম আছে। তারাও আমটা খেতে পারে। তবে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে, যাদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি তাদের আমটা একটু পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।