জরায়ুমুখ ক্যানসার রুখতে চাই সচেতনতা
জানুয়ারি মাস ছিল জরায়ুমুখের ক্যানসার সচেতনতা মাস। এ উপলক্ষে সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৬৩৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন। বর্তমানে তিনি জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যানসার ইপিডেমিওলজি বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : এই এক মাস আপনারা কী করলেন?
উত্তর : সাধারণ মানুষের মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কাজ করেছি। প্রথমত আমরা বিভিন্ন সংগঠনকে একত্রিত করার চেষ্টা করছি। যেমন আমাদের যে সংগঠন সিসিপিআর, ক্যানসার প্রতিরোধ ও গবেষণা কেন্দ্র, যারা উদ্যোগ নিয়েছে, এখানে সরকারি বেসরকারি যতগুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের যে সংগঠনগুলো আছে, সবাইকে আমারা চেষ্টা করি, একত্রিত করার জন্য। একত্রিত প্রয়াসের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে এর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছি, যেন সবাই বুঝতে পারে এর প্রয়োজনটা। আমরা পোস্টার প্রকাশ করেছি। মাসের শুরুতেই একটি অনুষ্ঠান করেছিলাম, গোলটেবিল আলোচনা। সেখানে বিশেষজ্ঞদের অনেক বক্তব্য এসেছে। এর পাশাপাশি পুরো মাস ঢাকা ও ঢাকার বাইরে এলাকাভিত্তিক বেশ কিছু অনুষ্ঠান আমরা করেছি। চেষ্টা করেছি সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়ার জন্য। তাদের নিয়ে জরায়ুর ক্যানসারের বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা তুলে ধরার জন্য।
প্রশ্ন : ঢাকার বাইরে কতগুলো জেলা কভার করেছেন?
উত্তর : ছয়টি জেলায় আমরা নিজেরা যেতে পেরেছি। আমাদের বিভিন্ন সংগঠনের যে স্থানীয় প্রতিনিধি আছেন, বা স্থানীয় শাখা আছে, তাদের মাধ্যমে। আজকে আমাদের যে বিশেষ কর্মসূচি আছে, সেখানে আমরা আশা করছি, একটি বিশেষ শোভাযাত্রা করছি। প্রায় সব জেলায় এটি পালিত হবে। আমাদের চিকিৎসক, ক্যানসারের যারা সারভাইভার থাকেন, সমাজসেবামূলক অনেক সংগঠন, সরকারি বেসরকারিভাবে এগিয়ে এসেছে। আমরা এখানে একটি কথা বলব। স্তন ক্যানসার নিয়ে আমরা যতটা বেশি সারা পাচ্ছি, অনেক বছর ধরে জরায়ুর ক্যানসার নিয়ে এখানে সচেতনতা একটু কম। আমরা চেষ্টা করছি সবাইকে বোঝানোর জন্য। জরায়ুমুখের ক্যানসার তো দ্বিতীয় স্থানে আছে নারীদের মধ্যে, স্তন ক্যানসার এক নম্বর। আক্রান্তের হারের দিক থেকে স্তন ক্যানসারের হার জরায়ুর ক্যানসার থেকে শতকরা চার ভাগ বেশি। তবে মৃত্যুর হার প্রায় কাছাকাছি। মানে স্তন ক্যানসারে সুস্থ হওয়ার হার যত বেশি; জরায়ুমুখের ক্যানসারে ওইভাবে সুস্থ হওয়ার হার বেশি নয় বলে পার্থক্যটা কম। নিম্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থার নারীরা বেশি আক্রান্ত হয় জরায়ুমুখের ক্যানসারে। এই জন্য আমরা চাচ্ছি সচেতনতার বিষয়টি আরো বেশি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য।
উচ্চবিত্তদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের প্রবণতা থাকে অনেক। তবে সে তুলনায় জরায়ুমুখের ক্যানসার হয় নিম্নবিত্তদের। সে জন্য আমি বলব, জরায়ুমুখের ক্যানসারের ক্ষেত্রে আরো বেশি সচেতন হওয়া জরুরি। সারা বছর ধরেই কাজ চলবে। শুধু জানুয়ারি মাস বলে কথা নয়।