নাকের সৌন্দর্যে সার্জারি
নাকের সৌন্দর্য বাড়াতে যে সাজারি করা হয় তাকে রাইনোপ্লাস্টি বলে। আজ ৩০ জুন এনটিভির স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২০৮২তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, বিভাগীয় প্রধান এবং কসমেটিক সার্জন ডা. ফেরদৌস কাদের মিনু।
প্রশ্ন : রাইনোপ্লাস্টি একটি বিশেষ ধরনের সার্জারি। এই বিষয়ে কিছু বলুন?
উত্তর : রাইনোপ্লাস্টি নাকের সৌন্দর্যকরণ সার্জারি বা নাকের প্লাস্টিক সার্জারি। এখানে মূলত নাকের আকারটাকে ঠিক করা হয়। বাইরে থেকে নাকের সার্জারির মাধ্যমে নাকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করি। এখানে সেপটোরাইনোপ্লাস্টিও করা হয়, ভেতর থেকে নাকের যদি কোনো সমস্যা থাকে এটা ঠিক করা হয়।
অনেকে আবার আকারটা পরিবর্তন করতে চায়, একটু নাকটাকে চোখা করতে চায়, সৌন্দর্যের জন্য, এই সার্জারিটা করি। এটাও রাইনোপ্লাস্টি। এর মানে কখনো এটি ফাংশনাল (ভেতরে গঠনগত), কখনো এটি এসথেটিক (সৌন্দর্যবোধ বিশিষ্ট)।
প্রশ্ন : এ ক্ষেত্রে আপনারা কোন ধরনের রোগী বেশি পাচ্ছেন?
উত্তর : দুই্ ধরনের রোগী পাওয়া যায়। অনেকে ভেতরের সমস্যা নিয়ে আসছে এবং তখনো একই কথা বলে নাকের আকারটা সুন্দর করা যায় কি না। তখন আমরা ওনাদের দুটো ঐচ্ছিক বিষয় দেই। আর তরুণরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নাকের আকৃতি সুন্দর করতে আসে।
প্রশ্ন : কীভাবে আপনারা কাজটি করছেন? যদি নাকের হাড় বাঁকা থাকে তখন কীভাবে আপনি রাইনোপ্লাস্টি করছেন?
উত্তর : দুটো সার্জারিই আমরা নাকের ভেতর থেকে করি। এটা বাইরে থেকে কিছু বোঝা যাবে না। সেপটোরাইনোপ্লাস্টি করা হলে নাকের মধ্যের ভাগটিকে ঠিক করা হয়। এরপর উপরের আকৃতিটি ঠিক করে দেই।
অনেকে অনেক অবাস্তব চিন্তা করে আসে অন্যের মতো নাক লাগবে, এমনটা করা যায় না। তাই রোগীকে পরামর্শ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। বোঝাই আপনার চেহারার সাথে যা যাবে সেটি করা হবে।
প্রশ্ন : নাকের অস্ত্রপচার অনেকে প্রয়োজন পড়লেও করতে চান না। ভাবেন নাকটা হয়তো আরো খারাপ হয়ে যেতে পারে। এই ধারণা কেন হয়?
উত্তর : এটাতো মানুষের স্বাভাবিক স্বভাব। সে নিরাপদ থাকতে পছন্দ করে। যেকোনো সার্জারির আগে মানুষ চিন্তা করে তার ভালো জিনিসটা খারাপ হয়ে যাবে কি না। আর রাইনোপ্লাস্টিতে নাকের আকার সাধারণত কখনো খারাপ হয় না। নাকে কোনো সমস্যা হয় না।
প্রশ্ন : নাকের হাড় বাঁকার ক্ষেত্রে চিকিৎসক যদি রাইনোপ্লাস্টির কথা পরামর্শ দেন, আর যদি না করা হয় তবে কী কী জটিলতা হয়?
উত্তর : নাকের হাড় বাঁকা থাকলে তারা ঠিক মতো শ্বাস নিতে পারেন না। তাঁদের গলা শুকিয়ে যায়। রাতে ঠিক মতো ঘুমাতে পারেন না। নাক ডাকার সমস্যা হয়। দিনের বেলায়ও অস্বস্তি বোধ করেন। একটা পর্যায়ে দেখা যায় সম্পূর্ণ নাকেই সমস্যা হচ্ছে। জীবন ধারণটা রোগীর নষ্ট হয়ে যায়। সে ঠিক মতো ঘুমাতে বা দম ফেলতে পারে না। অ্যালার্জির রাইনাইটিস বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন : এই সার্জারি করতে কতক্ষণ সময় লাগে এবং রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে কত দিন সময় লাগে?
উত্তর : এটা সাধারণত নির্ভর করে কতখানি কাজ করে তার ওপর। সাধারণ একটি রাইনোপ্লাস্টি করতে কত দিন সময় লাগে। লোকাল এনেসথেসিয়া দিয়েই এটা করে ফেলা যায়। একটা প্লাস্টার থাকে, যেটা দুদিন থাকে এর পরই রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে। একটু ফোলা থাকে তবে সেটা রোগীদের বলে দেই, সাত দিন , ১০ দিন এই সমস্যা থাকে।
প্রশ্ন : ফলোআপের জন্য কবে আসতে বলেন?
উত্তর : দুই দিন পরই প্রথম ফলোআপে আসতে বলি। এরপর পাঁচ দিন , ১০ দিন- এভাবে।
প্রশ্ন : নাকের আকার সুন্দর করে নেওয়া প্রক্রিয়াটা কোথায় গেলে আসলে পাল্টাতে পারবে?
উত্তর : যেখানে কসমেটিক সার্জারি হচ্ছে সেখানে করা যাবে। এবং রাইনোপ্লাস্টি করছে এমন একজন সার্জনের কাছে যেতে হবে। এ ধরনের সেন্টার কোথায় আছে তা ওয়েবসাইটে গেলেই জানতে পারবে। আমাদের সেন্টারে গেলেও এর সেবা পাবে।