পানি বিশুদ্ধ করার অন্যতম প্রক্রিয়া হলো ফোটানো। তবে এভাবে বিশুদ্ধ করা পানি পুনরায় বা দীর্ঘ সময় ফোটানো ঠিক নয়। কারণ একই পানি একাধিকবার বা দীর্ঘ সময় ফোটানো স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর। 

সাধারণত পানি খাওয়ার উদ্দেশে একবারই ফোটানো হয়। কিন্তু চা বা কফি খাওয়ার ক্ষেত্রে কেতলিতে নেওয়া একই পানি বারবার ফোটানো হয়। 

স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘হেলথি অ্যান্ড ন্যাচারাল লাইফ’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পানি প্রথমবার ফোটানো হলে এর মধ্যে মিশে থাকা ক্ষতিকর উপাদান বাষ্পের মাধ্যমে উড়ে যায়। কিন্তু ওই পানি আবার ফোটানোর ফলে এটি আর প্রথমবারে মতো পানযোগ্য থাকে না। 

পানি একাধিকবার বা দীর্ঘ সময় ফোটানো হলে এর মধ্যে এর মধ্য থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক বস্তুর গঠনের পরিবর্তন ঘটে। পানির মধ্যে থাকা স্বাস্থ্যকর খনিজ উপাদানগুলো হয়ে ওঠে ক্ষতিকর। আর পানি গরম করা পাত্রের কারণে দীর্ঘ সময় ফোটানো পানি কিডনির পাথর হওয়ার কারণ হিসেবেও দেখা দিতে পারে। 

নাইট্রেট 
পৃথিবীর প্রায় সব পদার্থের মধ্যেই এটি পাওয়া। মাটি, পানি, বাতাসসহ সব স্থানের দেখা মেলে নাইট্রেট যৌগ। অতিরিক্ত তাপমাত্রায় এটি স্বাস্থ্যের জন্য প্রচণ্ড ক্ষতিকর হিসেবে দেখা দেয়। অধিক সময় উত্তপ্ত করা হলের পানির নাইট্রেট যৌগের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। তখন এসব যৌগ জরায়ু, কোলন, অগ্ন্যাশয়, খাদ্যনালি ও পাকস্থলীর ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। 

ফ্লুরাইড 
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় উত্তপ্ত পানির মধ্যে ফ্লুরাইড যৌগ পাওয়া যায়। এই যৌগ মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ ছাড়া শিশুদের মস্তিষ্কের গঠন প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফ্লুরাইড যৌগ। ‘এনভায়রনমেন্ট হেলথ সায়েন্সেস’ সাময়িকীর প্রতিবেদন অনুযায়ী ফ্লুরাইড শিশুদের আইকিউ হ্রাস করার জন্য দায়ী হতে পারে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের অপর এক গবেষণা অনুযায়ী সন্তান জন্মদান ক্ষমতা কমায় ফ্লুরাইড যৌগ। 

আর্সেনিক 
পানি একাধিকবার বা দীর্ঘ সময় ফোটানোর ফলে এর মধ্যে থাকা অর্সেনিক আরো ক্ষতিকর হয়ে দেখা দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, পানির আর্সেনিক বিষক্রিয়ায় মানুষের বিপাক প্রক্রিয়ায় অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ ও ফুসফুসের নানা রোগের জন্য দায়ী আর্সেনিক।