পিঠ ও কোমরের ব্যথা দূর করতে কী করবেন?
পিঠ ব্যথা, কোমর ব্যথা পরিচিত সমস্যা। এই ব্যথা কোনো বয়স মানছে না আজকাল। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সেই এ সমস্যা শরীরে জেঁকে বসছে।
এর কারণ হচ্ছে আধুনিক জীবনযাত্রা। বিলাসবহুল জীবন ও ফ্যাশনের দাবি মেটাতে গিয়ে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় আমরা এমন কিছু করে ফেলি, যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্য সমস্যায় পতিত করে।
আবার সাধারণ কিছু অভ্যাস থেকেও এ সমস্যাগুলোর সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের হাঁটা-বসা-ঘুম প্রতিটি ক্ষেত্রে ভুল অভ্যাসজনিত অঙ্গভঙ্গি ও ব্যবহৃত সামগ্রী থেকেই এসব সমস্যার সূত্রপাত।
আমাদের সকলেরই রয়েছে অভ্যাসজনিত কিংবা প্রচলিত ব্যবস্থাজনিত ত্রুটি। কিন্তু এসব ত্রুটি সম্পর্কে অনেকেই জানে না। জানলেও চেপে যান।
যেমন ধরুন, নরম বিছানা। নরম বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতে মন কার না চায়। অথচ কোমরে ব্যথার জন্য দায়ী নরম বিছানা ও ত্রুটিপূর্ণ শয়ন ব্যবস্থা।
আবার ধরুন, বসার চেয়ার। চেয়ারের ডিজাইন অনেক ক্ষেত্রেই এ ব্যথার জন্য দায়ী। চেয়ার হতে হবে এমন, যাতে আপনার পিঠের স্বাভাবিক বঙ্কিমতা বা বাঁকানো ভাব স্বাভাবিক থাকে। পিঠের কোথাও যেন বিশেষ কোনো অস্বাভাবিক চাপ দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী না হয়। হলে অসুবিধা হবেই।
আবার ঘুমানোর ক্ষেত্রে, অনেকেরই কোনো বাছবিচার নেই, কেউ উপুড়, কেউ বা হ-য-ব-র-ল অবস্থা করে হাত-পা এলোমেলো রেখে ঘুমান। এটা ঠিক নয়। ঘুমানোরও রয়েছে সঠিক অঙ্গভঙ্গি। এবার আসা যাক মূল আলোচনায়।
স্পাইন মানে শুধু একটি অস্থি নয়, ৩৩টি অস্থিকে থরে থরে সাজিয়ে তৈরি হয় ভার্টিব্রাল কলাম। ভার্টিব্রা মানে হচ্ছে কশেরুকা। প্রতিটি কশেরুকা তার পরবর্তী কশেরুকা থেকে তরুণাস্থি বা কার্টিলেজ দিয়ে পৃথক করা রয়েছে। একে বলা হয় ডিস্ক। এই ডিস্ক ধাক্কাকে সামাল দেয় এবং স্পাইনকে আরো ফ্লেক্সিবল করে যাতে সহজেই বিভিন্ন দিকে বাঁকানো যায়। ভার্টিব্রাল কলামের স্পাইন লম্বালম্বি অবস্থান করে না।
এটা দেখতে ইংরেজি বর্ণ ‘এস’-এর মতো। ‘এক ব্যাক’ বা পেছনের ব্যথাকে প্রতিরোধ করতে হলে, এই স্পাইন সঠিক অবস্থানে রাখতে হবে এবং তা সকল কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে। উদর এবং পেছনের মাংসপেশি স্পাইনের নড়াচড়ায় সাহায্য করে থেকে এবং স্পাইনকে সঠিক অবস্থানে ধরে রাখে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।