ফেইসাল পালসির চিকিৎসায় করণীয়
ফেইসাল পালসি এক ধরনের স্নায়ুরোগ। এ রোগে ফেইসাল করোটিক স্নায়ুর অসুস্থতায় মুখের একদিক আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে অবশ হয়ে মুখ অন্যদিকে বেঁকে যায়। এতে চেহারার বিকৃতি, চোখের সমস্যা ও মুখের স্বাদের ব্যাঘাত ঘটে। এর চিকিৎসায় করণীয় বিষয়ে আজকের আলোচনা।
চিকিৎসা
- রোগীকে আশ্বস্তকরণ
- রোগের কারণ এবং ভবিষ্যৎ ফলাফল সম্পর্কে রোগীর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা।
- সাধারণত তিন ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ক. ফিজিওথেরাপি
* মুখের অবশ অংশে গরম সেঁক দেওয়া (ভেজা তোয়ালের মাধ্যমে)।
* মুখে মালিশ করা এবং আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখের বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করা। এতে মুখের নড়াচড়া পরিলক্ষিত না হলেও অক্ষত স্নায়ুরজ্জু পুনরুজ্জীবিত হয় এবং মুখের মাংসপেশির স্বাভাবিক অবস্থা বজায় থাকে।
খ. ওষুধপত্র
* কর্টিকোস্টেরয়েড,
* প্রয়োজনে ভাইরাসনাশক ওষুধ, যেমন- এসাইক্লোভির,
* রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধিকারক ওষুধ নিকোটিনিক এসিড,
* ব্যথা প্রশমনে এনালজেসিক ইত্যাদি দেওয়া হয়ে থাকে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ গ্রহণ করবেন না।
গ. অপারেশন
* কদাচিৎ ফেইসাল স্নায়ুর ডিকমপ্রেশন বা বহিরাংশচ্ছেদন-স্নায়ুর চাপ কমানোর জন্য।
* চোখের যত্ন : খুবই জরুরি; চোখকে ধুলোবালি থেকে রক্ষা করা, চোখের শুষ্কতা রোধে ফোঁটা জাতীয় কৃত্রিম অশ্রুর ব্যবহার, প্রয়োজনে অপারেশনের মাধ্যমে চোখ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা। সর্বোপরি রোগের ধরন অনুযায়ী রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়। এটি ফিজিওথেরাপি ওষুধপত্র বা অপারেশন, যেকোনো ধরনের বা সম্মিলিতভাবে হতে পারে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগ সম্পূর্ণভাবে সেরে যায়। এটি নির্ভর করে রোগের কারণ ও ব্যাপ্তির ওপর। তবে মুখের পক্ষাঘাতকে কখনো অবহেলা করতে নেই। সময়মতো বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা নিলে অনেক মারাত্মক জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।