ব্যথামুক্ত প্রসব কীভাবে করা হয়?

প্রসব অত্যন্ত ব্যথাদায়ক একটি বিষয়। তবে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নতির কারণে এখন সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত প্রসব করা সম্ভব।
ব্যথামুক্ত প্রসবের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩২৭৭তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. কামরুন নেসা। বর্তমানে তিনি বিআরবি হাসপাতালের গাইনি ও অবস বিভাগের প্রধান ও পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ব্যথামুক্ত প্রসব কীভাবে সম্ভব?
উত্তর : আপনি বলেছেন প্রসবের ব্যথা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্টদায়ক ব্যথা। সে ক্ষেত্রে আমাদের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ যে কীভাবে আমরা ব্যথামুক্ত একটি স্বাভাবিক ভ্যাজাইনাল প্রসব করব। সে ক্ষেত্রে আসলে অনেক ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। এর মধ্যে কিছু রয়েছে, আমাদের রোগীর সঙ্গে কাউন্সেলিং বা পরামর্শ করতে হয়। আমরা চিকিৎসাবিজ্ঞানে জানি, কাউন্সেলিং আসলে একটি বড় অংশ। এটি অনেক মানসিক চাপ কমায়। এতে যেকোনো মানসিক চাপ যখন দূর হবে, তখন স্পর্শকাতরতা কমে যাবে। সে ক্ষেত্রে রোগীকে যদি আমরা খুব ভালো করে কাউন্সেলিং করতে পারি, এটি কাজ দেবে আমাদের। এরপর কিছু ম্যাসাজ আমরা দিতে পারি, রোগী কীভাবে চলবে সেটি বলে দিই। ব্যাক ম্যাসাজ, পেটের ম্যাসাজ, এটি রোগীর কিছুটা ব্যথা কমায়। এরপর আকুপাংচার কিছু পদ্ধতি রয়েছে, সব হচ্ছে ওষুধ ছাড়া পদ্ধতি। কিছু শিথিল করার পদ্ধতি রয়েছে। রোগীকে শিখিয়ে দিই, আপনার যখন ব্যথা আসবে, আপনি লম্বা লম্বা শ্বাস নেবেন। এই যে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যথা, এতে কিন্তু কিছু ব্যথামুক্তি হয়। ১০০ ভাগ ব্যথা আমরা কমাতে পারি না। এই ব্যথা কমানোর জন্য আমরা যেটি করি, কিছু ওষুধ ব্যবহার করি। এই ওষুধের মধ্যে কিছু রয়েছে, যেগুলো আমরা গাইনোকোলজিস্টরা নিজেই ব্যবহার করতে পারি। আইভি ক্যানোলা রয়েছে, এই ক্যানোলা দিয়ে আমরা নিজেই ইনজেকশন দিতে পারি। প্যাথেডিন, মরফিন, ট্রামাডল এই ধরনের কিছু ইনজেকশন দিলে ব্যথা কমে, তবে ১০০ ভাগ ব্যথা কমাতে পারি না আমরা। কিন্তু সম্প্রতি আমরা যেটি প্র্যাকটিস করছি, সেটি হলো এপিডোরাল এনালজেসিয়া। আমরা রোগীর কোমরে একটি ইনজেকশন দিই, একটি ক্যাথেডার রেখে দিই, এটি দিয়ে আমরা নিয়মিত তাকে ব্যথার ওষুধ দিচ্ছি। এটা গাইনোকোলজিস্টরা দিতে পারি না, এ জন্য আমাদের অ্যানেসথেসিওলজিস্টকে ডাকতে হয়। তারা আমাদের সাহায্য করেন। তখন তারা এসে এই এপিডোরাল ক্যাথেডারটা দিয়ে দেন। তখন যেই ওষুধ দেওয়া হয়, এর মাধ্যমে ব্যথামুক্ত প্রসব সম্ভব।