কোলরেক্টাল ক্যানসারের চিকিৎসায় অনকোলজিস্টদের ভূমিকা কী?

কোলরেক্টাল ক্যানসারের চিকিৎসায় অনকোলজিস্টদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ক্যানসার যদি বেশি ছড়িয়ে পড়ে, তখন রেডিওলজি, কেমোথেরাপি দিতে হয়। এসব ক্ষেত্রে অনকোলজিস্টরা কাজ করে থাকেন।
কোলরেক্টাল ক্যানসারের চিকিৎসায় অনকোলজিস্টদের ভূমিকার বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৩৮১তম পর্বে কথা বলেছেন ডেল্টা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আরমান রেজা চৌধুরী রাকেশ।
প্রশ্ন : কোলরেক্টাল চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনকোলজিস্টদের ভূমিকা কী?
উত্তর : প্রথমত, লক্ষণগুলো নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে চিকিৎসক হয়তো রোগ নির্ণয়ের জন্য কিছু পরীক্ষা করেন। কোলরেক্টাল ক্যানসারের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা হলো কোলনোস্কোপি। এটি করে দেখা যায় যে কোলরেক্টাল অংশে ক্যানসারের মতো কোনো বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে কি না। যদি এ ধরনের কোনো বৃদ্ধি বা টিউমার দেখা যায়, এখান থেকে বায়োপসি করা হয়। একটি ক্যানসার প্রমাণ করার জন্য বায়োপসি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। বায়োপসি ছাড়া একে ক্যানসার বলা যাবে না।
এরপর বায়োপসিতে যখন প্রমাণিত হয় যে এটি ক্যানসার, তখন চিকিৎসকের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয় যে এই ক্যানসারটা আসলে কোন পর্যায়ে রয়েছে। সাধারণ মানুষ আমাদের কাছে জিজ্ঞেস করে যে কোন পর্যায়ে রোগটা রয়েছে বা ক্যানসারটা রয়েছে। সেই পর্যায় নির্ণয়ের জন্য কিছু পরীক্ষা করতে হয়।
সেগুলোর মাধ্যমে দেখা হয়, রোগটি কি নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রয়েছে, নাকি আশপাশে ছড়িয়ে গিয়েছে, নাকি দূরে কোথাও ছড়িয়ে গিয়েছে। এগুলো দেখার জন্য পর্যায়ক্রমে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়।
এগুলো পরীক্ষা করার পর গাইডলাইন বা স্টেজিং পদ্ধতির মাধ্যমে দেখা হয়, এটি কোন পর্যায়ে রয়েছে। চিকিৎসাটা আসলে সেই পর্যায় অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হয়।
প্রশ্ন : আপনাদের ভূমিকা এখানে কী?
উত্তর : সার্জারি করার মতো অবস্থা থাকলে সার্জন সার্জারি করেন। আর যদি দেখা যায়, আশপাশে একটু ছড়িয়ে গিয়েছে, দূরে কোথাও যায়নি, সেই ক্ষেত্রে সার্জনরা আমাদের অনকোলজিস্টদের কাছে রোগীকে পাঠান। আমাদের কাজ হলো রোগীকে নিউঅ্যাডজোভেন চিকিৎসা দেওয়া। অর্থাৎ প্রধান যে চিকিৎসা, একে আরো ভালোভাবে করার জন্য চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেই জন্য সার্জারির আগে কিছু চিকিৎসা দিতে হয়। যেমন, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, এগুলোর মাধ্যমে নিউঅ্যাডজোভেন চিকিৎসা দিয়ে রোগটিকে একটু নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে আনা হয়। অর্থাৎ ছোট করে ফেলা হয়। এতে সার্জন খুব ভালোভাবে সার্জারিটা করতে পারে। সেই জিনিসটির কাজ আমরা করি। এটি এক নম্বর।
দ্বিতীয়ত হলো, যদি দেখা যায় যে অস্ত্রোপচার হয়ে গেছে, কিন্তু অস্ত্রোপচার পরবর্তীকালে হিসটোপ্যাথলজি দেখে মনে হচ্ছে এ রকম কোনো অসুখ এখানে রয়েছে, যেটি চোখে দেখা যাচ্ছে না, তাহলে রোগটি ফিরে আসার একটি ভয় থাকে। এর জন্য আমরা একে বলি অ্যাডজোভেন চিকিৎসা। অর্থাৎ অস্ত্রোপচারের পরে এটি যেন আর ফিরে না আসে, আশঙ্কা কমিয়ে ফেলার জন্য অ্যাডজোভেন চিকিৎসা দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রেও রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি এগুলো রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে, অ্যাডজোভেন চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই গেল দ্বিতীয় বিষয়।
তৃতীয়ত হলো, যদি রোগটা অন্য কোনো জায়গায় ছড়িয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে রোগটা যেই পর্যায়ে ছড়িয়ে গেছে, সেখান থেকে কমিয়ে আনা বা আর বাড়তে না দেওয়া, এগুলোর জন্য রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি এগুলোর মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
পেলিয়াটিভ চিকিৎসায়ও কিন্তু রেডিয়েশনের ভূমিকা রয়েছে। পাশাপাশি কেমোথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।