কোলেস্টেরল কমানোর ৭ উপায়
কোলেস্টেরল বর্তমানে খুব প্রচলিত একটি সমস্যা। কোলেস্টেরল দুই ধরনের হয়। একটি লো ডেনসিটি লাইপো প্রোটিন (এলডিএল) বা বাজে কোলেস্টেরল এবং অপরটি হাইডেনসিটি লাইপো প্রোটিন (এইচডিএল) বা ভালো কোলেস্টেরল। শরীরে বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃৎপিণ্ডের নানা ধরনের অসুখ, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে দেহের বাজে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের সাত পদক্ষেপের কথা।
১. ধূমপান ত্যাগ করুন
ধূমপান ধমনির ভেতরে আবরণ তৈরি করে একে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সিগারেটের ধোঁয়া থেকে বের হওয়া কারসিনোজেন এবং কার্বনমোনোক্সাইডের ধমনিতে এই আবরণ তৈরি করে। এটি রক্তে বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় এবং ভালো কোলেস্টেলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। তাই বাজে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে অবশ্যই ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
২. সপ্তাহের অধিকাংশ দিন ব্যায়াম করুন
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ব্যায়াম অনেক ভালো ওষুধ। গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে ব্যায়াম শরীরের বাজে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগকে দূরে রাখে। তবে কতটুকু ব্যায়াম করবেন? গবেষকরা বলেন, প্রতিদিন অন্তত ৪০ থেকে ৬০ মিনিট ব্যায়াম করলে পাঁচ থেকে দশ ভাগ বাজে কোলেস্টেরল শরীর থেকে দূর করে, পাশাপাশি তিন থেকে ছয় ভাগ ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়।
৩. সম্পৃক্ত চর্বি ও ট্রান্স ফ্যাট-জাতীয় খাবার কমান
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে অবশ্যই চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া কমাতে হবে। এ ছাড়া ডিমের কুসুম, ভাজা খাবার, দুগ্ধজাতীয় খাবার এবং বেক করা খাবার খাওয়া কমাতে হবে। কারণ এই স্যাচুরেটেট ফ্যাট (সম্পৃক্ত চর্বি) এবং ট্রান্স ফ্যাট-জাতীয় খাবার বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। তাই এই ধরনের খাবারের পরিমাণ অবশ্যই খাদ্যতালিকা থেকে কমিয়ে দিন।
৪. মদ্যপান না করা
মদ্যপান দেহের চর্বি জমায়, শরীরের কোলেস্টেরলের পরিমাণকে বাড়িয়ে দেয়। তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে মদ্যপান করা থেকে বিরত থাকুন।
৫. বাড়তি ওজন কমান
আপনার যদি উচ্চতার তুলনায় ওজন বেশি থাকে, তবে অবশ্যই ওজন কমাতে হবে। ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। হাঁটুন, সাইকেল চালান বা অ্যারোবিকস ব্যায়াম করতে পারেন। এগুলো দেহে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করবে।
৬. সবুজ শাকসবজি খান
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সবুজ শাকসবজি খাওয়া ক্যানসার, অস্টিওপোরোসিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এক থেকে দুই কাপ সবজি রাখুন।
৭. মাছ খান
দেহের বাজে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডসমৃদ্ধ মাছ খান। মাছ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং বাজে কোলেস্টেরলের ঝুঁকি কমায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সামুদ্রিক মাছ শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। এ ছাড়া ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার যেমন সয়াবিন, ক্যানোলা, ওয়ালনাট ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখুন।