কীভাবে বুঝবেন পেপটিক আলসার হয়েছে?
দেহের অন্ত্রনালির আলসারকে সাধারণত পেপটিক আলসার বলে। পেপটিক আলসারের লক্ষণ কী, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৭৮তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. এইচ এ এম নাজমুল আহসান। বর্তমানে তিনি পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কোথায় আলসার হয়েছে, লক্ষণ দেখে কি চিহ্নিত করা যায়?
উত্তর : পেপটিক আলসারের চিকিৎসা এখন অনেক উন্নত হয়েছে। আগে এক সময় চিন্তা করা হতো, এসিড বেশি নিঃসরণের জন্য পেপটিক আলসার হতো। অথবা বাসি, পঁচা খাবার, ঝাল খাবার খেলে বোধ হয় পেপটিক আলসার হবে। তবে এখন দেখা গেছে, এটি আসলে একটি জীবাণু সংক্রান্ত অসুখ। এইচ পাইলোরি ইনফেকশন বলে একটি অসুখ, যাকে ওয়াটার বর্ন ডিজিজও বলা হয়। এটা পানিবাহিত অসুখ। এটিই এক সময় পাকস্থলীতে বা ডিওডেনামে এক ধরনের ক্ষত তৈরি করে। হঠাৎ হলে অনেক সময় বোঝা যায় না। আমরা যেই অসুখটা বুঝিয়ে থাকি, সেটি আসলে ক্রনিক পেপটিক আলসার। দীর্ঘদিন ধরে হয়। কয়েক মাস, কয়েক বছর ধরে হতে পারে। ১০ বছর, ১৫ বছর থাকতে পারে।
এতে নাভির ওপর, পেটের ওপরে অংশে ব্যথা হয়। খাওয়ার সঙ্গে এর খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সাধারণত ডিওডেনাম আলসারে খালি পেটে ব্যথা হয়। গ্যাসট্রিক আলসারে সাধারণত দেখা যায় খাওয়ার পর বেশি হয়। ডিওডেনাম আলসারে কিছু খেলেই দেখা যায় ব্যথা কমে গেছে। ডিওডেনাম আলসারটা প্রচলিত। খালি পেটে ব্যথা হলে সে কিছু খেয়ে নেয়। দেখা যায়, তিন থেকে চার মাস তার উপসর্গ থাকল। আবার দেখা যায়, কিছু সময়ের জন্য সে ভালো থাকে।
ওমিপ্রাজল গ্রুপের ওষুধ রয়েছে; প্রোটোন পাম্প ইনহিবিটর। এ জাতীয় ওষুধগুলো খেলে পেপটিক আলসার অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু যেহেতু পেপটিক আলসার একটি জীবাণু সংক্রান্ত অসুখ,তাই একদম ভালো হতে গেলে জীবাণুকে দূর করতে হয়।
আপনি জেনে থাকবেন, আমাদের দেশে এক বিরাট সংখ্যক মানুষ এ ধরনে ওষুধ খাচ্ছে। এই ওষুধগুলোর বিশাল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া প্রতিনিয়ত হতে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে দেখা গেল, এর জন্য মানুষকে ভুগতে হচ্ছে।
কিন্তু এই পেপটিক আলসার রোগ খুব সহজে নির্ণয় করা সম্ভব। এন্ডোস্কোপি করলে বোঝা যাবে, ব্যক্তির পেপটিক আলসার রয়েছে কি না। যদি আসলেই তার পেপটিক আলসার থাকে, তাহলে তার একটি কোর্স শেষ করতে হয়। এইচ পাইলোরি ওষুধ দিয়ে থাকি, এটি ১০ দিন বা ১৪ দিন খেতে হবে। এ ধরনের একটি ওষুধ যদি সে দুই মাস খায়, তাহলে সারা জীবনের জন্য সে ভালো হয়ে গেল। তবে দেখা যায়, রোগটি নির্ণয় না করেই নিজেরা নিজেরা ওষুধ খাচ্ছে। এ ওষুধের জন্য দেখা যেতে পারে আরো অনেক সমস্যা তৈরি হচ্ছে।