নাক ডাকলে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে!
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/03/25/photo-1458898916.jpg)
নাক ডাকা বেশ বিব্রতকর একটি সমস্যা। বিভিন্ন কারণে এ সমস্যা হয়। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৩৩৭তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. মণিলাল আইচ লিটু। তিনি সলিমুল্লাহ কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
urgentPhoto
প্রশ্ন : নাকের একটি প্রচলিত সমস্যা হলো নাক ডাকা। এটি অনেকেই ডাকে। এ সমস্যা কেন হয়?
উত্তর : নাক ডাকা আসলে একটি অসুখ। তবে সব নাক ডাকা অসুখ নয়। মাইল্ড, মডারেট, সিভিয়ার—তিন ধরনের স্লিপ এপনিয়া আছে। পলিসোনোগ্রাফি বলে একটি পরীক্ষা রয়েছে। এর মাধ্যমে এটি নিরূপণ করতে হয়।
নাক ডাকার মূলত তিনটি বিষয় রয়েছে—সেন্ট্রাল স্লিপ এপনিয়া, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ এপনিয়া ও কোম্বাইন। অবস্ট্রাকটিভ যেটি, সেটি নাকের যে ছিদ্র, সেখান থেকে শ্বাসনালির নিচ পর্যন্ত হয়। বাতাস আসা-যাওয়ায় বাধাপ্রাপ্ত হলে তার নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।
এ ছাড়া সেন্ট্রাল কিছু কারণ রয়েছে। পলিউমাইরাইটিস, টিউমার অন্যান্য কিছু কারণ রয়েছে।
এ ছাড়া বেশি মদ্যপান করা, ধূমপান—এগুলো নাক ডাকার কারণ। মুটিয়ে যাওয়া নাক ডাকার আরেকটি কারণ। তখন ফ্যারিংসের যে পেশি সেখানে চর্বি জমে, ডায়ামিটারটা কমে যায়। আসলে তখন নাক ডাকে না, গলা ডাকে।
প্রশ্ন : এ থেকে মুক্তির উপায় কী?
উত্তর : দেখুন, নাক ডাকা নিয়ে আমাদের দেশে অনেক মিথও আছে। যেমন কুম্ভকর্ণ নাক ডাকত। নাক ডেকে ঘুমানোকে আমরা ভালো মনে করি। আসলে এটি মোটেও ভালো নয়। এটি অত্যন্ত খারাপ একটি জিনিস। নাক ডাকলে যে সমস্যা হয়, তার মধ্যে একটি হার্ট অ্যাটাক। নাক ডাকলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। নাক ডাকার জন্য মানুষের ভেতর উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হতে পারে। গাড়ি দুর্ঘটনা হয়। কেবল যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর ৮০ হাজার গাড়ি দুর্ঘটনা হয় শুধু নাক ডাকার কারণে। নাক ডাকা অসুখ থাকলে অনেক দেশে গাড়ি চালাতে দেওয়া হয় না।
নাক ডাকার কারণে ভালোমতো ঘুম হয় না। তাই তিনি হয়তো ঘুম ঘুম ভাবের মধ্যে থাকেন। এতে গাড়ি চালাতে গেলে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। তাই এখন পশ্চিমা বিশ্বে যেটি করা হয়েছে, বিশেষ করে আমি দুটি দেশের উদাহরণ দেব, যুক্তরাষ্ট্রে ও অস্ট্রেলিয়ায় গাড়িচালক যদি নাক ডাকে, তাহলে সে গাড়ি চালাতে পারে না। তার লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হয়।
নাক ডাকা দূর করার জন্য যেটা করা হয়, তাকে কিছু কিছু স্বাস্থ্যের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। যেমন স্লিপ হাইজিন মেনে চলতে হবে। প্রতিদিন কিছু পরিমাণ ব্যায়াম করতে হবে। ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
মদ্যপান ও ধূমপান পরিহার করতে হবে। এগুলো খুব ক্ষতিকর। ঘুমের ওষুধ নাক ডাকার একটি কারণ। এ ছাড়া বেশি কাজ, ঘুমানোর সময় দেহের অঙ্গবিন্যাস, সেগুলোও গুরুত্বপূর্ণ।
প্রয়োজন হলে এর চিকিৎসা নিতে হবে। মেডিকেল বা সার্জিক্যাল যা-ই হোক।
এখন আধুনিক চিকিৎসা হলো স্লিপএপ মেশিন দেয়। সব সময় ইতিবাচক বাতাস চলাচলের মেশিন। মাস্ক লাগিয়ে দেওয়া হয় নাকে। এতে অনেক রোগীই উপকার পায়।
এ ছাড়া সার্জারি করা হয়। তবে খুব কম সংখ্যক রোগীর এই চিকিৎসা লাগে। ৫ থেকে ১০ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে এই চিকিৎসা লাগে।