বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস : যক্ষ্মা বাড়ার কারণ কী?
একসময় বলা হতো, যার হয় যক্ষ্মা তার নাই রক্ষা। এখন ধারণাটি অনেক বদলেছে। তবে এরপরও যক্ষ্মা হচ্ছে। এর কারণ কী?
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৬৮৭তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মাহবুবুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি আল-মানার হাসপাতালের রেসপিরেটরি বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : আজ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য কী নির্ধারিত হয়েছে?
উত্তর : বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস প্রতিবছরই ২৪ মার্চ পালন করা হয়। ১৮৮২ সালে, মানে আজ থেকে ১৩৫ বছর আগে এই দিনে রবার্ট কক নামের একজন বিজ্ঞানী এই জীবাণু আবিষ্কার করেছিলেন। সেই দিনটি মাথায় রেখে তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার জন্য এই দিবস পালন করা হয়। এবারের বিশ্ব যক্ষ্মা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ইউনাইট টু অ্যান্ড টিউবারকলোসিস’। এই বছরে আমরা নতুন করে শপথ নেব যক্ষ্মা নির্মূল করার।
প্রশ্ন : যক্ষ্মা নিয়ে এত আন্দোলন, এত কিছু, এরপরও যক্ষ্মা হচ্ছে—এর কারণ কী?
উত্তর : প্রতিবছরই সারা পৃথিবীতে লোক বাড়ছে। লোক যেমন বাড়ে, রোগও সে রকম বাড়ে। যক্ষ্মাও তেমনি বেড়ে যাচ্ছে। এর জন্য বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চালু আছে। সারা বিশ্বেই যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চালু আছে। যক্ষ্মা হলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় একটি অ্যান্ডিমিক রোগ। ২২টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ আছে। বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। আমাদের দেশ মধ্য আয়ের দেশ। এত ঘনবসতি। আপনারা জানেন, যক্ষ্মা এমন একটি রোগ, যেটি হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। আমাদের প্রতিটি পরিবারে দেখবেন অনেক লোক একসঙ্গে বসবাস করছে। যদি আমরা একজন আক্রান্ত হই, তাহলে আমার থেকে বাসার অন্যান্য লোক আক্রান্ত হতে পারে। এর জন্য প্রতিবছরই যক্ষ্মার নতুন নতুন রোগী তৈরি হচ্ছে।
প্রশ্ন : যক্ষ্মার লক্ষণ কী কীভাবে প্রকাশ পায়?
উত্তর : একটি হলো ফুসফুসের যক্ষ্মা। আরেকটি হলো ফুসফুসবহির্ভূত যক্ষ্মা। ৮৫ ভাগ হলো ফুসফুসের যক্ষ্মা। আর ১৫ ভাগ হলো অন্যান্য যক্ষ্মা। ফুসফুসের বাইরে, যেমন—হাড়ে যক্ষ্মা হতে পারে, জয়েন্টে হতে পারে, ত্বকে হতে পারে, পেটে হতে পারে। মেয়েদের জরায়ুতে হতে পারে। শরীরের যেকোনো জায়গায় এটি হতে পারে।
ফুসফুসের যক্ষ্মা যদি হয়, কাশি থাকবে। কাশির সঙ্গে জ্বর থাকবে। জ্বরটা সাধাণত দুপুরের পরে আসে। এই জ্বর অল্প জ্বর। সাধারণত ১৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে যক্ষ্মা রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।
ফুসফুসের যক্ষ্মার সময় হাঁচি হবে, কাশি হবে। এর সঙ্গে জ্বর থাকবে। ওজন কমে যাবে। ক্ষুধামান্দ্য হবে। অনেক সময় কাশির সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। আবার নাও যেতে পারে।