সাইদুল আনামের ‘কালবেলা’ শেষ করবেন স্ত্রী মোবেশ্বরা
নিজের পরিচালিত ছবিটি শেষ না করেই চলে গেছেন অভিনেতা, চিত্রসম্পাদক ও নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল। গত ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ‘আধিয়া’র ছবির এই পরিচালক। জীবনের শেষবেলায় হাত দিয়েছিলেন নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণে। কাজ গুছিয়েও এনেছিলেন, কিন্তু শেষ করে যেতে পারলেন না। ‘কালবেলা’ শিরোনামের ছবিটির শুটিং বাকি আছে মাত্র দুদিন। তাই স্বামীর অবর্তমানে ছবির দায়িত্ব নিয়েছেন স্ত্রী মোবেশ্বরা খানম । এমনটিই জানিয়েছেন ছবির প্রধান সহকারী হুমায়ূন কবির শুভ। ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন শিশির ও তাহমিনা অথৈ। ছবির মতিন ও সানজিদা চরিত্রে তাঁরা অভিনয় করছেন।
হুমায়ূন কবির শুভ বলেন, ‘আমাদের ছবির শুটিং আসলে প্রায় শেষ হয়েছে। টানা শুটিং করেই কাজটি আমরা শেষ করেছি। ছবির একটি গণসংগীতের শুটিং বাকি আছে। সেটি শুটিং করা হয়নি, কারণ টুটুল ভাই বলেছিলেন এই গানটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয় ছবির জন্য। আমরা এখন ছবির এডিটিংয়ের কাজ করছি। যদি এডিটিং শেষ করার পর মনে হয় গানটি লাগবে, তা হলে গানটির শুটিং করা হবে।’
পরিচালক ছাড়া ছবির বাকি কাজ কীভাবে হবে—জানতে চাইলে শুভ বলেন, ‘আসলে গানের শুটিং সাধারণত করেন কোরিওগ্রাফার। তারপরও ছবির পরিচালক হিসেবে কাজ করবেন টুটুল ভাইয়ের স্ত্রী মোবেশ্বরা খানম। এরই মধ্যে তিনি বিষয়টি ঘোষণা দিয়েছেন। তা ছাড়া আমরা পুরো টিম তো আছিই।’
এ বিষয়ে ছবির নায়ক শিশির বলেন, ‘কাজটি আমরা অনেক যত্ন করে করেছি। সাইদুল আনাম টুটুল স্যার নিখুঁত কাজ করেন। নিজে তৃপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা শট দিয়েছি। আমাদের ছবির যে গানটি বাকি আছে, সেটি নির্বাচনের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুটিং হওয়ার কথা রয়েছে। সবাই দোয়া করবেন, আমরা যেন স্যারের ছবিটি সারা দেশের মানুষকে দেখাতে পারি।’
‘কালবেলা’ চলচ্চিত্রের গল্প নেওয়া হয়েছে ২০০১ সালে আইন ও সালিশ কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত ‘নারীর ৭১ ও যুদ্ধপরবর্তী কথ্যকাহিনী’ বই থেকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় অসংখ্য নারীর ওপর অন্যায়, অত্যাচার ও নির্যাতনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। তার মধ্যে একজন নারী সানজিদা। সানজিদার ওপর করা মানসিক ও সামাজিক নির্যাতনের গল্প নিয়েই নির্মিত হচ্ছে চলচ্চিত্রটি।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকারি অনুদানে ‘কালবেলা’ ছবির পরিচালনা শুরু করেন সাইদুল আনাম টুটুল। এর আগে সরকারি অনুদানে নির্মিত সাইদুল আনাম টুটুলের প্রথম ছবি ‘আধিয়ার’ মুক্তি পায় ২০০৩ সালে। ১৯৭৯ সালে ‘সূর্যদীঘল বাড়ী’ চলচ্চিত্রে কাজ করে শ্রেষ্ঠ চিত্রসম্পাদক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।