চিঠি ফাঁস, বেরিয়ে এলো আরজি করে ঘর ভাঙার নির্দেশদাতার নাম
আরজি কর হাসপাতালের চারতলার সেমিনার রুমে পাওয়া গিয়েছিল চিকিৎসকের দেহ। সেই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর দেখা যায় পিডাব্লিউডি সেমিনার রুমের লাগোয়া একটি ঘর ও বাথরুম ভাঙতে শুরু করেছে। সেই সময়ই অভিযোগ ওঠে, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় এই কাজ করা হয়েছে। ডিডাব্লিউর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীও এই কথা বলেন। তখন থেকেই প্রশ্ন উঠছে, কে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন?
টিভি৯ বাংলা সেই নির্দেশের প্রতিলিপিসহ জানিয়েছে, সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে, এই চিঠির সত্যতা ডিডাব্লিউ যাচাই করে দেখতে পারেনি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, চিঠিতে সন্দীপ ঘোষ লিখিতভাবে এই ঘর ভাঙার অনুমতি দিয়েছেন।
সন্দীপ ঘোষকে এখন সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে। তবে, আর্থিক অনিয়মের অভিযোগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন এই চিঠির পর তার বিরুদ্ধে চিকিৎসক হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্তকারী সংস্থা করে কি না, তা জানা যায়নি।
গত শুক্রবারও ইডির কর্মকর্তারা কলকাতায় সন্দীপ ঘোষের বাড়িতে তদন্তের জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু বাড়ি তালাবন্ধ দেখে তারা ফিরে আসেন। ইডি হাওড়ায় বিপ্লব সিংহ এবং কৌশিক কোলের বাড়িতে এবং সুভাষগ্রামে প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি করছে।
সূত্র জানাচ্ছে, প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের ধারণা হয়েছিল, সন্দীপ ঘোষের নির্দেশে পিডাব্লিউডি সেমিনার রুমের পাশের ঘর ভাঙার কাজ করছিল। কিন্তু, তখন এই চিঠি পাওয়া যায়নি। এখন সেই চিঠি পাওয়ার পর বোঝা যাচ্ছে,এই কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সন্দীপ ঘোষ কতটা ব্যাগ্র ছিলেন।
যে চিঠিটা সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে সন্দীপ ঘোষ পূর্ত দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে ১০ অগস্ট একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেখানে তিনি জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারদের রুম ও তার টয়লেট বানানোর কথা বলেছিলেন। সেখানে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, ডাক্তারদের উপযুক্ত রুম ও টয়লেটের অভাব রয়েছে। একাধিক বিভাগেই এই সমস্যা রয়েছে। রেসিডেন্ট ডাক্তারদের অনুরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
চিঠিতে এটাও লেখা হয়েছিল, এই বিষয়টি স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ও ডিরেক্টর মেডিকেল এডুকেশনের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আরজি করের বোর্ড রুমে সেদিনই যে ওই বৈঠক হয়েছে, সেটাও চিঠিতে বলা হয়েছে।
১৩ অগাস্ট বিকেলে হাইকোর্ট সিবিআই নির্দেশ দেওয়ার আগে পিডাব্লিউডির কর্মীরা সেমিনার রুমের পাশের ঘরে কাজ করে বলে অভিযোগ আছে। সুবর্ণ গোস্বামী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আমরা প্রথম থেকে দাবি করে আসছিলাম, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তৃপক্ষ এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
টিভি৯ ও হিন্দুস্তান টাইমসের বরাতে ডয়চে ভেলে তাদের প্রতিবেদনে আরও বলেছে, বিজেপি নেতা ও মিডিয়া সেলের প্রধান অমিত মালবীয় এই চিঠিটি টুইট করে বলেছেন, এটা বিস্ফোরক। তার দাবি, ‘বোঝা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিথ্যা কথা বলেছিলেন। তারা বলেছিলেন, সেমিনার রুমের পাশের ঘর ভাঙার কাজ ধর্ষণ ও হত্যার আগে থেকে শুরু হয়েছে। এমনকী যারা ভাঙা দেওয়ালের ভিডিও শেয়ার করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশ মামলা দায়ের করেছে।’