বরিশালে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
নবনির্বাচিত সিটি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের সাথে বঙ্গবন্ধুর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বরিশালে ফিরে নগরীর কাশিপুরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই গ্রুপ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে। শনিবার (৮ জুলাই) রাতে কাশিপুরের পেট্রোল পাম্পে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতরা বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতদের মধ্যে নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফাইজুল ইসলাম, আশিক, ২৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া, সাজ্জাদ হোসেন, ফরহাদউদ্দিন, মাহাদি, মাসুদ, হাসান, তুহিন, রাহাত, জান এর নাম জানা গেছে।
নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইমরান মোল্লা জানান, টুঙ্গিপাড়ায় খাবার দেওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক হয়। তারা কাশিপুর পেট্রোল পাম্পে এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। কে কোন পক্ষের তিনি জানেন না।
এয়ারপোর্ট থানার ওসি মো. হেলালউদ্দিন জানান, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রিয়াজ ভুইয়া জানান, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দুটি পক্ষ হয়ে মারামারি হয়েছে। উভয় পক্ষের আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এখানে কোন অনুসারীর বিষয় নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্রলীগ নেতা জানান, বরিশাল সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম তাদের অনুসারীদের নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করতে যান। সেখানে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিনের অনুসারীদের সাথে খাবার নিয়ে তর্ক হয় আরেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ানের অনুসারীদের।
বরিশালে ফিরে জসিম উদ্দিনের সাথে যাওয়া ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা নগরীর কাশিপুর সুরভী পেট্রোল পাম্প এলাকায় এসে অবস্থান নেয়। অসীম দেওয়ানের অনুসারীরা সেখানে এসে পৌঁছালে তাদের উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করা হয়। এ সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।
অসীম দেওয়ান অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল জানান, কাশিপুর এলাকায় পৌঁছালে আচমকা আশপাশ থেকে বাসের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। একদল অজ্ঞাত সন্ত্রাসী লাঠি রড নিয়ে হামলা চালায়। তারা এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে সবাইকে আহত করেছে। এই মুহূর্তে ১৩-১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। এর মধ্যে রাহাতের অবস্থা গুরুতর।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) রুনু সরকার জানিয়েছেন, দুই পক্ষের ৭-৮ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অপরদিকে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ১৫ জন হাসপাতালের সার্জারি ও অর্থপেডিক্স ইউনিটে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জন গুরুতর আহত রয়েছেন।
মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান বলেছেন, তার অনুসারীদের উপর হামলা হয়েছে। কারা করেছে বিস্তারিত জানেন না।
মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন জানান, বহিরাগত কিছু লোক ঢুকে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার কঠিন বিচার করা হবে।