হিলি-হাকিমপুর নাগরিক কমিটির মানববন্ধন
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের চারমাথা মোড়ে মানববন্ধন করেছে হিলি-হাকিমপুর নাগরিক কমিটি। আজ সোমবার (১০ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই মানববন্ধন পালন করা হয়।
হিলি স্থলবন্দরের প্রধান সড়ক চারলেনকরণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন এবং হিলি রেলস্টেশনের আধুনিকায়নসহ সব আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে এ মানববন্ধন করা হয়। এ সময় সড়কে দাঁড়িয়ে দুই ঘণ্টা অবরোধ করায় আমদানি-রপ্তানি করা পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাকসহ সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন পথচারীরা।
মানববন্ধনে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপ, বাংলাহিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বন্দর শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ, মোটর পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের বিপুল মানুষ এতে অংশগ্রহণ করে।
নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান চৌধুরী মধুর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম মণ্ডল, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন বুলু, মিশর উদ্দিন সুজন, শিক্ষার্থী মোস্তাকিম ও মোশারফ।
এ মানববন্ধনের কারণে হিলি চেকপোস্ট জিরোপয়েন্ট থেকে পানামা পোর্ট পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি করা পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক, পথচারী, অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাকসহ বাস চলাচল দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকে। এতে সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। মানববন্ধন শেষ হলে আবারও কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার প্রতি বছর এই হিলি বন্দর থেকে শত শত কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে। কিন্তু এখানকার রাস্তাঘাটের অবস্থা বেহাল। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে সড়কের কাজ দ্রুত শেষ হচ্ছে না। ফলে সড়কে প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া বিজিবির বাধার কারণে হিলি রেলস্টেশনে কোনো ট্রেন দাঁড় করানো হয় না এবং রেলস্টেশনে কাউকে থাকতে দেওয়া না। তাই অতি দ্রুত রাস্তার কাজ সম্পন্ন করতে হবে। রেলস্টেশনের উন্নয়ন ও চলাচল করা সব ট্রেন থামাতে হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধসহ হিলি অচল করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে আত্মাহুতি দেওয়ারও ঘোষণা দেওয়া হয়।
সরকার হিলি স্থলবন্দরের প্রধান সড়ক হিলি চেকপোস্টের জিরোপয়েন্ট থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত সোয়া দুই কিলোমিটার সড়ক চারলেনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর ফলে গত বছরের ডিসেম্বরে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আরসিসি ঢালাইযুক্ত কাজ শুরু হয়। কিন্তু শুরু থেকেই সংশ্লিষ্ট ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠিান নির্মাণ কাজ করা নিয়ে গড়িমসি করে আসছে। এক মাস কাজ করলে আবার তিন মাস কাজ করে না। ফলে বন্দরের এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহণ এবং পথচারী ও বিভিন্ন যান চলাচল চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে আসছে। চলতি বর্ষায় এই ভোগান্তি আরও চরম আকার ধারণ করেছে। মাঝেমধ্যেই ভারতীয় ও বাংলাদেশি পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এতে বন্দরে দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আহত হচ্ছেন ট্রাকচালক ও পথচারীরা। এই অবস্থায় ভারতের ব্যবসায়ীরা সড়কটির কাজ দ্রুত শেষ করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচল রাখতে হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের চিঠিও দিয়েছেন।