ভয় না করে আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটাতে হবে : মির্জা ফখরুল
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভয় না করে আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। তিনি বলেছেন, এই সরকার ১৫ বছরে বিএনপির হাজার লোককে মেরে ফেলেছে। গুম, মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তাতে ভয় পেলে চলবে না।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সেমিনারে আজ শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। ‘কৃষি উপকরণ ও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি: সরকারের অব্যবস্থাপনা—কৃষক এবং জনগণের নাভিশ্বাস’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালি দল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিশ্বের সমস্ত দেশেই দ্রব্য মূল্যের দাম বেড়েছে। তবে, আমাদের দেশে বেড়েছে নজিরবিহীনভাবে। এর মূল কারণ, একটি জবাবদিহিহীন সরকার। যাকে কোথাও কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। যা ইচ্ছে তাই করছে। তাদের দুর্নীতি, দুঃশাসন আজ এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে যে মানুষের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এখন মৃত্যুবরণ করার মতো একটা অবস্থায় গেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কয়েকটা দিন আছে। মাসও নেই। আসুন, আমরা বুকে সাহস নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আরে মারবে তো মারবেই, ১৫ বছরে আমাদের হাজার লোককে মেরে ফেলেছে। গুম, মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে রাজপথে নেমে আসতে হবে। আন্দোলন করতে হবে। ভয় না করে আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘দেশে তো প্রজেক্ট অনেক করা হয়। কিন্তু, সেই প্রজেক্টের মূল লক্ষ্য হলো চুরি করা। এমন চুরি যেটা এক লাখ টাকায় হবে সেটা তিন লাখ টাকা, যেটা ১০ কোটি টাকায় হবে সেটা ৩০ কোটি টাকা। ওই প্রজেক্টের সঙ্গে যারা জড়িত থাকেন তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়, এটাই বাস্তব কথা।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এই নেতা বলেন, ‘এখন তারা (আওয়ামী লীগ) একটা নতুন সুর তুলেছে, বিএনপি সন্ত্রাসী দল। বিএনপি যদি সন্ত্রাসী দল হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ কী? আপনারা সন্ত্রাসের বাবা। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই রাষ্ট্রকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ সরকার অনির্বাচিত সরকার। তারা ১৫ বছর দেশটাকে একটা লুটের রাজত্ব করেছে। কী পরিমাণ লুট করেছে তা বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না। এর পরিণাম আজ বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হচ্ছে।’
সরকারি কর্মকর্তাদের প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসিচব বলেন, ‘এখন কোনো সরকারি কর্মকর্তা কিন্তু অসুখী নয়। কারণ, তারা কোনো না কোনো প্রজেক্টের সঙ্গে জড়িত আছেন। জড়িতদের প্রচুর পয়সা আছে। দেশের মানুষ ডিম কিনতে পারছে না, কিন্তু, ইলেকশনে ঘুষ দেওয়ার জন্যে ডিসি-ইউএনওদের গাড়ি কিনে দেওয়া হচ্ছে।’
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানে মানে ক্ষমতা ছাড়ুন, দেশের মানুষকে বাঁচতে দেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে কেটে পড়ুন।’