এমপি আনার হত্যায় সিয়ামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলার আসামি সিয়াম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত এই আদেশ দেন। এ বিষয়ে আজ সোমবার (৩ মে) শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
জালাল উদ্দিন বলেন, গত রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারি পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এদিকে আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যায় জড়িত সিয়াম হোসেনকে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) নেপালে আটক করেছে। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী সিয়াম কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে আনারকে খুনের পর নেপালে আত্মগোপন করে। এরপরই ঢাকার পুলিশ তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে কাঠমান্ডু এনসিবিতে তাকে আটকের জন্য অনুরোধ জানিয়ে মেইল পাঠায়। পুলিশ সূত্র বলছে, সিয়ামকে বাংলাদেশে পুলিশের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছে কাঠমান্ডু পুলিশ।
এরইমধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের দল নেপাল গেছেন। তবে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকায় সিয়ামকে ফেরাতে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ১২ মে সন্ধ্যায় আনোয়ারুল আজীমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলা দায়ের করেন। এজাহারে ডরিন বলেন, “মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের বাসায় আমরা সপরিবারে বসবাস করি। ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা আনোয়ারুল আজীম আনার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ১১ মে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বাবার সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বললে তার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাই। গত ১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। এতে লিখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউ টাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নাই। আমি পরে ফোন দেবো।’ এছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। ক্ষুদে বার্তাগুলো আমার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে।”
ডরিন আরও বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজ করতে থাকি। কোনো সন্ধান না পেয়ে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস বাদী হয়ে ভারতীয় বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও আমরা খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে বাবাকে অপহরণ করেছে।’
এদিকে এ মামলায় শিমুল ভুইঁয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভুইঁয়া ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ, তানভীর ভুইঁয়া ও শিলাস্তি রহমান প্রথম দফায় আট দিনের রিমান্ড শেষে দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছে।