নওগাঁয় কেজিতে ৩ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে চালের দাম
খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা নওগাঁ ধান উৎপাদনের এই ভরা মৌসুমে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে নওগাঁর পাইকারি ও খুচরা বাজারে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। প্রকারভেদে খুচরা বাজারে সকল জাতের চালের দাম কেজি প্রতি ৩ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) পৌর খুচরা ও পাইকারি চাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, চিকন জাতের কাটারি চাল ৭৮ থেকে ৮০ টাকা কেজি, জিরাশাইল চাল ৬৬ থেকে ৭০ টাকা, মোটা জাতের স্বর্ণা-৫ চাল ৫৬ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন মিল মালিকরা তাদের কাছে থেকে বস্তা প্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি দাম রাখায় খুচরা বাজারে কেজি প্রতি চালের দাম বেড়েছে। কাটারি চিকন জাতের চাল গত সপ্তাহে তারা ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা বস্তা কিনলেও এ সপ্তাহে তা বেড়ে ৩ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার টাকায় তাদের কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। এছাড়াও প্রকারভেদে সকল ধরনের চালের দাম কেজি প্রতি ৩ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
নওগাঁ খুচরা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, আমি গত সপ্তাহে যে চাল ৩ হাজার ৬০০ টাকা বস্তা কিনেছি। সেট এখন কিনতে হচ্ছে ৩ হাজার ৭০০ টাকায়। তবে সবগুলো চালের দাম বাড়তি। বড় বড় অটোমিল মালিকদের কাছে কিনতে গেলে ৩ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার টাকা বস্তা নিবে। এমনকি ৪ হাজার ১০০ টাকাও নিতে পারে।
ভোক্তারা জানিয়েছেন- সপ্তাহে সপ্তাহে নানান অজুহাতে চালের দাম বেড়েই চলেছে। শুধু চাল নয় নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বাজারে। মোটা জাতের চালের দাম বেশি। চিকন জাতের চালের দাম আরও বেড়েছে। ফলে তাদের দিনযাপনে নানান সমস্যা সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছেন। সরকারি মনিটরিং জোরদার এবং ন্যায্যমূল্যে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে স্বল্পমূল্যে চাল বিক্রির ব্যবস্থা করার দাবি জানান ক্রেতারা।
কামরুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, সপ্তাহে সপ্তাহে বাজারে গেলেই শুনতে হচ্ছে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। জানি না কতো দাম বাড়লে খুশি হবে ব্যবসায়ীরা।
আরেক ক্রেতা সুমন বলেন, আমরা গরীব মানুষ। দিন দিন চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। বাজারে অন্যান্য জিনিসের যে দাম তাতে এখন মোটা চাল কিনে খাওয়াই কঠিন হয়ে গেছে। মিল মালিকদের অজুহাত আমন ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে বেড়েছে ধানের দাম। এর প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। তবে বাজার মনিটরিং জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
নওগাঁ জেলা চাল কল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, কাটারি সিদ্ধ ৩ হাজার ৬০০ টাকা ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে। আর কাটারি নাজির স্লো আইটেম হওয়ার কারণে ৩ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার টাকা ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে।
চালের দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে আপনার করণীয় কী এমন প্রশ্নের জবাবে ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, ধানের বাজারে মূল্য বৃদ্ধি আর চালের বাজারে চালের আমদানি কম হওয়ায় এখন চালের বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। সরকার যদি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে চাল আমদানি করে, তাহলে এমনিতেই বাজারে চালের দাম কমে যাবে। আর যদি সরকার চাল আমদানিতে ব্যর্থ হয় তাহলে এ সমস্যা আগামী মৌসুম পর্যন্ত চলমান থাকতে পারে।
এদিকে চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে আছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। তাদের দৈনিক চাল কিনে খেতে হওয়ায় দামের সাথে মিল না থাকায় এক পণ্য নিতে অন্য পণ্য ক্রয়ের জন্য হিমশিম খেতে হচ্ছে।