ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩২২

ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩২২ জন নিহত ও ৮২৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। একই সময়ে রেলপথে ২১টি দুর্ঘটনায় ২০ জন ও নৌপথে ৪টি দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছেন।
আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ২৪ মার্চ থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ দিনে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
তবে আগের বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও আহত মানুষের সংখ্যা কমেছে। ২০২৪ সালের ঈদুল ফিতরে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১৩৯৮ জন আহত হয়েছিলেন। সেই হিসেবে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ২১ দশমিক ০৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ ও আহত ৪০ দশমিক ৪১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। ঈদে ১৩৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫১ জন নিহত ও ১৫৫ জন আহত হয়েছেন, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৭০ জন চালক, ৪৭ জন পরিবহণ শ্রমিক, ৫০ জন পথচারী, ৬০ জন নারী, ৪০ জন শিশু, ৩৩ জন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ রয়েছেন।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার অবাধ চলাচল, মহাসড়কে রোড সাইন ও বাতির অভাব, মিডিয়ান ও ডিভাইডার না থাকা, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য, উল্টোপথে গাড়ি চালানো এবং অদক্ষ চালকদের বেপরোয়া গতিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যাত্রী কল্যাণ সমিতি মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার আমদানি-নিবন্ধন বন্ধ করা, মহাসড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা, দক্ষ চালক তৈরি, যানবাহনের ফিটনেস নিশ্চিত করা এবং ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগসহ বেশ কিছু সুপারিশ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ জকরিয়াসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানির বিষয়েও আলোকপাত করেন এবং এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।