পুরস্কার কেলেঙ্কারি
‘নিয়তি’ জাজের ছবি নয়?
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬-এর শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালকের জন্য ঘোষিত হয়েছেন মোহাম্মদ হাবিব। তিনি ‘নিয়তি’ ছবির জন্য এই পুরস্কার পাচ্ছেন। অথচ খোদ হাবিবই জানিয়েছেন ছবিতে তিনি কাজই করেননি। এনটিভি অনলাইনে প্রথম এই বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশিত হলে আলোচনার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে।
ছবিটি জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত— এই তথ্য এত দিন সবাই জানত, এমনকি সেন্সর বোর্ডও তাই জানত। শুধু তাই নয়, যৌথ প্রযোজনার এই ছবিটি যে জাজ মাল্টিমিডিয়ারই তার প্রমাণ রয়েছে জাজের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে। ২০১৬ সালে সেখানে তারা নিজেরাই প্রচার করেছে ‘নিয়তি’ ছবির প্রযোজক তারা। এমনকি সহপ্রযোজক ভারতের এসকে মুভিজের ইউটিউব চ্যানেলে ‘নিয়তি’ ছবির যে ট্রেইলার দেখা যায়, সেখানেও সহপ্রযোজক হিসেবে জাজ মাল্টিমিডিয়ার নাম রয়েছে। ২০১৬ সালে ছবিটি মুক্তির আগে জাজের করা সংবাদ সম্মেলনেও দাবি করা হয় ‘নিয়তি’র প্রযোজনা তারা করেছে। কিন্তু এনটিভি অনলাইনে পুরস্কার কেলেঙ্কারির খবরটি গত সোমবার প্রকাশের পর জাজ মাল্টিমিডিয়া দাবি করছে ‘নিয়তি’ ছবিটি তারা প্রযোজনা করেনি। তারা এই ছবির পরিবেশক।
জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলিমুল্লাহ খোকন বলেন, ‘এই ছবিটি আমরা প্রযোজনা করিনি। আমরা ছবিটি পরিবেশনা করেছি মাত্র। আমরা যেমন ছবি প্রযোজনা করি, তেমনি পরিবেশনাও করি। এখন কোনো ছবির পরিবেশনা করলে সেই ছবি কলাকুশলী কে থাকবেন, সেই দায় আমাদের নয়।’
ছবিটির প্রযোজক হিসেবে এখন বলা হচ্ছে আনিসুর রহমানের নাম। আর ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখানো হচ্ছে এএইচ এন্টারটেইনমেন্টকে। জাজ মাল্টিমিডিয়ার পক্ষ থেকে এমনটাই জানানো হয় গতকাল।
জাজের দাবি করা ছবির প্রযোজক আনিসুর রহমানের সাথে যোগযোগ করা হলে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের কথা শুনে তিনি বিস্মিত হন। এর কারণ তিনি জানেনই না তাঁর প্রযোজিত ছবি দুটি ক্যাটাগরিতে জাতীয় পুরস্কার ঘরে তুলতে যাচ্ছে। হাবিবের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমি এই ছবির প্রযোজক ঠিক আছে, কিন্তু আমি শুধু টাকা দিয়েছি, অন্য কিছু বলতে পারব না। এই সিনেমার সব কিছুই করেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। আমি একেবারেই নতুন প্রযোজক, যে কারণে এসবের অনেক কিছুই বুঝি না আমি। আর আমার জানা মতে হাবিব ছবিতে কাজ করেছেন। কিন্তু কেন উনি এখন বিষয়টি অস্বীকার করছেন আমি তা বলতে পারবো না। আমি আপনাদের কাছেই জানলাম আমার ছবি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। আমি জাজ মাল্টিমিডিয়ার সাথে বসব, তারপর আমি এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।’
এসকে মুভিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ‘নিয়তি’ ছবির ট্রেইলর লিংক-
জাজ মাল্টিমিডিয়ার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ‘নিয়তি’ ছবির ট্রেইলর লিংক-
১. আজীবন সম্মাননা : যৌথভাবে ববিতা ও ফারুক।
২. শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র : অজ্ঞাতনামা (ফরিদুর রেজা সাগর)
৩. শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র : ঘ্রাণ (এস. এম. কামরুল আহসান)
৪. শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র : জন্মসাথী (একাত্তর মিডিয়া লিমিটেড ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর)
৫. শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক : অমিতাভ রেজা চৌধুরী (আয়নাবাজি)
৬. শ্রেষ্ঠ অভিনেতা প্রধান চরিত্রে : চঞ্চল চৌধুরী (আয়নাবাজি)
৭. শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্রে : যৌথভাবে তিশা (অস্তিত্ব) ও কুসুম শিকদার (শঙ্খচিল)
৮. শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রের : যৌথভাবে আলী রাজ (পুড়ে যায় মন) ও ফজলুর রহমান বাবু (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
৯. শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রের : তানিয়া আহমেদ (কৃষ্ণপক্ষ)
১০. শ্রেষ্ঠ অভিনেতা/অভিনেত্রী খল চরিত্রে : শহীদুজ্জামান সেলিম (অজ্ঞাতনামা)
১১. শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী : আনুম রহমান খান সাঁঝবাতি (শঙ্খচিল)
১২. শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক : ইমন সাহা (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
১৩. শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক : মো. হাবিব (নিয়তি)
১৪. শ্রেষ্ঠ গায়ক: ওয়াকিল আহমেদ (অমৃত মেঘের বারি, চলচ্চিত্র : দর্পণ বিসর্জন)
১৫. শ্রেষ্ঠ গায়িকা : মেহের আফরোজ শাওন (যদি মন কাঁদে, চলচ্চিত্র : কৃষ্ণপক্ষ)
১৬. শ্রেষ্ঠ গীতিকার : গাজী মাজহারুল আনোয়ার (বিধিরে ও বিধি, চলচ্চিত্র : মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
১৭. শ্রেষ্ঠ সুরকার : ইমন সাহা (বিধিরে ও বিধি, চলচ্চিত্র : মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
১৮. শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার : তৌকীর আহমেদ (অজ্ঞাতনামা)
১৯. শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: যৌথভাবে অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম (আয়নাবাজি)
২০. শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা : সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন (আন্ডার কনস্ট্রাকশন)
২১. শ্রেষ্ঠ সম্পাদক : ইকবাল আহসানুল কবির (আয়নাবাজি)
২২. শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক : উত্তম গুহ (শঙ্খচিল)
২৩. শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক : রাশেদ জামান (আয়নাবাজি)
২৪. শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক : রিপন নাথ (আয়নাবাজি)
২৫. শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা : যৌথভাবে সাত্তার (নিয়তি) ও ফারজানা সান (আয়নাবাজি)
২৬. শ্রেষ্ঠ মেক-আপম্যান : মানিক (আন্ডার কনস্ট্রাকশন)