প্রথম রোজায় চম্পাকে হালুয়া করে দেন সুচন্দা

‘আমরা তিন বোন এখন আলাদা সংসার নিয়ে ব্যস্ত, আমাদের অনেক জায়গাতে ইফতারের দাওয়াত থাকে। যে কারণে প্রায়ই আলাদা আলাদা ইফতার করতে হয়। এরপরও সুযোগ করে একসঙ্গে ইফতার করি তিন বোন। ইফতার শেষে একসঙ্গে তারাবির নামাজ আদায় করি, বাসায় মুরুব্বিদের কাছে ধর্মীয় আলোচনা শুনি। রাতে একসঙ্গে সেহরি খাই। রোজার এই মাসটা অনেক পবিত্র মনে হয় সবকিছু। মানসিকতা ভালো থাকে, ভালো কাজ করতে আরো বেশি ভালো লাগে।’
রোজার মাস নিয়ে এভাবেই এনটিভি অনলাইনকে নিজেদের কথা বলছিলেন নায়িকা চম্পা।
বড় বোন সুচন্দা ও ববিতা প্রসঙ্গে চম্পা বলেন, ‘দেখা যায় যে, তিনবোনের মধ্যে যেকোনো একজনের বাসায় সবাই চলে আসি। বক্সে করে নিজের মতো ইফতার বানিয়ে নিয়ে যাই, তারপর সবাই মিলে ইফতার করি। এটা আমাদের জন্য অনেক সুখের, অনেক আনন্দের।’
ছোটবেলার সেহরি ও ইফতার নিয়ে চম্পা বলেন, ‘ছোটবেলায় আমরা যশোরে বড় হয়েছি। সেখানে সেহরির সময় ঘুম ভাঙত আশপাশের মাইকিং ও রাস্তায় ছেলেদের ডাকে। উঠে পড়ুন, উঠে পড়ুন, সেহরি খাবার সময় হয়েছে- কথাগুলো এখনো কানে বাজে। রোজা রাখি আর না রাখি, সবার সঙ্গে বসে সেহরি খেতেই হবে। আশপাশের সব বাসার মানুষ উঠে যেত, অনেক সুন্দর একটা পরিবেশ ছিল তখন।’
প্রথম রোজা নিয়ে চম্পা বলেন, ‘আমি প্রথম রোজা রাখি সাত বছর বয়সে, তখন তো বাচ্চা। তখন সুচন্দা আপা আমাকে বলে, কোনো একটি পাত্রে রেখে কিছু খেয়ে নিলে রোজা ভাঙে না। আমিও তার কথামতো রোজা পাত্রে রেখে কিছু একটা খেয়ে ফেলতাম। (হা হা হা)। তার মানে, দিনে তিনটা রোজা হয়ে যেত। তবে ১০ বছর বয়সে পরিপূর্ণ রোজা রাখি। আমার মনে আছে, সেদিন সুচন্দা আপা আমার জন্য হালুয়া রান্না করেছিলেন। কারণ আপা জানতেন, আমি হালুয়া অনেক পছন্দ করি। ববিতা আপা আমার জন্য অনেক ইফতারি রেডি করেছিলেন, আমি যেন সুন্দর করে ইফতার করতে পারি। সেদিন আমাকে কেন্দ্র করেই হয়েছিল সব আয়োজন।’
ছোটবেলার সঙ্গে এখনকার ইফতারের পার্থক্য জানতে চাইলে নায়িকা চম্পা বলেন, ‘আসলে আমাদের ছোটবেলার পরিবেশটা ছিল পাবিবারিক। এক পরিবারের সঙ্গে আরেক পরিবারের সম্পর্ক ছিল আত্মীয়র মতো। কারণ, তখন দেখতাম এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে সেহরির সময় খাবার নিয়ে আসছে। আবার আমাদের বাড়ি থেকে আশপাশের বাড়িতে খাবার দিয়ে আসা হতো। আর এখন তো আমরা যান্ত্রিক জীবন পার করছি। পাশের ফ্ল্যাটে কারা আছেন, তাই আমরা জানি না। সবাই সবার মতো ইফতার করছে, সেহরি খাচ্ছে। কেউ কারো খবর রাখছে না। আমার মনে হয়, এখন মানুষের মধ্যে সামাজিক বন্ধনটা দুর্বল হয়ে গেছে।’