আমজাদ হোসেন স্মরণে এফডিসিতে তিনদিনের শোক

বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আজ থেকে তিনদিনের শোক ও কর্মবিরতি পালন করছে চলচ্চিত্র পরিবার। টানা তিনদিন এফডিসিতে কোনো চলচ্চিত্রের শুটিং হবে না।
আমজাদ হোসেনকে স্মরণ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
জায়েদ খান বলেন, ‘আজ থেকে তিনদিন আমরা এফডিসিতে শোক পালন করছি। সব সমিতিতে আমরা কালো পতাকা উত্তোলন করেছি। এই তিনদিন এফডিসিতে কোনো চলচ্চিত্রের শুটিং হবে না। এমনকি এই তিন দিন আমরাও কোন শুটিংয়ে অংশ নেব না। আমজাদ হোসেন চলচ্চিত্রের আইকন, উনার সম্মানে আমরা এই শোক পালন করছি।আমজাদ হোসেনের মতো শিল্পীদের যুগে যুগে জন্ম হয় না। আমরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
জায়েদ আরো বলেন, ‘আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এফডিসিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে সম্মান জানানো হবে।’
গত ১৮ নভেম্বর রোববার সকাল ৯টার দিকে আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার তাঁকে (আমজাদ হোসেন) বিছানার নিচে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কখন তিনি অচেতন হয়েছেন, তা আঁচ করতে পারেননি সুরাইয়া আক্তার। এরপর সকাল ১০টার দিকে তাঁকে ইমপালস্ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। চিকিৎসকেরা জানান রোববার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় আমজাদ হোসেনের। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৭ নভেম্বর রাত আড়াইটার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ব্যাংকক নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর হার্টবিট, ব্লাডপ্রেশার এবং কিডনি ইনফেকশনের জন্য ডায়ালাইসিস চলেছিলে বলে জানান তাঁর ছেলে সোহেল আরমান।
আমজাদ হোসেন অভিনেতা, পরিচালক হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্র শুরু করেন তিনি। পরে চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনায় শুরু করেন।
প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ছবিটি পরিচালনা করেন ১৯৬৭ সালে। পরিচালক হিসেবে ‘নয়নমনি’ (১৯৭৬), গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮), ভাত দে (১৯৮৪) তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রের জন্য আমজাদ হোসেন শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেন। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক (১৯৯৩) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।
এ ছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য আমজাদ হোসেন ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।