যদি একদিন
কে এই রূপকথা?

‘যদি একদিন’ ছবির বিশেষ প্রদর্শনীর পর কলকাতার অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিকদের বলছিলেন, ‘আমি নই, এই ছবির হিরোইন রাইসা।’
ছবিতে শিশুশিল্পী রাইসার চরিত্রের নাম ছিল রূপকথা। পুরো গল্পের প্রাণ সে। তাকে নিয়ে ছবিতে একটা গানও আছে। ‘লক্ষ্ণীসোনা’ শিরোনামের গানটি লিখেছেন এস এ হক অলিক। গেয়েছেন হৃদয় খান। পর্দায় এই গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন তাহসান। রাইসার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
গানের কথার কয়েকটি লাইন এ রকম ‘রূপকথা তুই তো আমারই, জীবনের চেয়েও আরো দামি। তুই আমার জীবন, তুই ছাড়া মরণ, তুই যে আমারই সাত রাজার ধন।’ ছবিতে গল্প এগিয়েছে রূপকথাকে ঘিরেই। রূপকথার চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হচ্ছে রাইসা। এবারই রাইসা প্রথম কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করল।
রাইসা পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। রাজধানীর লালবাগের গ্রিন ল্যান্ড মডেল স্কুলের ছাত্রী সে। ২০১৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত একটি বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছিল রাইসা। ছোট্ট রাইসার বিলবোর্ড হয়েছিল পুরো ঢাকা শহরে। বিজ্ঞাপনের পর অনেক নাটকেও অভিনয় করেছে রাইসা।
‘যদি একদিন’ ছবির একটি দৃশ্যে তাহসান ও রাইসা। ছবি : সংগৃহীত
আরটিভিতে প্রচারিত সাগর জাহানের ‘মাখন মিয়ার উদার বউটা’ নাটকে তিশার সঙ্গে অভিনয় করে নজর কাড়ে রাইসা। অভিনয়ের জন্য আরটিভি থেকে সেরা শিশুশিল্পীর পুরস্কারও পায় সে। সেই নাটকে রাইসার অভিনয় দেখে মুগ্ধ হন ‘যদি একদিন’ ছবির পরিচালক মোহাম্মদ মুস্তাফা কামাল রাজ। রাইসার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। এনটিভি অনলাইনকে এমনটাই জানান রাইসার মা রোখসানা বেগম।
রোখসানা বেগম বলেন, “রাজ ভাইয়ের অফিসে রাইসাকে নিয়ে আসার পর শুনতে পাই এই ছবির রূপকথার চরিত্রের জন্য প্রায় ৪৭ জন শিশুশিল্পী অডিশন দিয়েছে। আমি মনে মনে ভেবেছিলাম রাইসা কি পারবে? আমার দ্বিধা কাটিয়ে রাজ ভাই বলেছিলেন, আপনার মেয়েই পারবে। রাজ ভাই সেদিন রাইসাকে শুধু ছবির একটা সংলাপ দেখিয়ে, সেটা বলতে বলেছিলেন। রাইসা সেটা বলার পরই ওকে নির্বাচন করে রাজ ভাই। এরপর জানতে চায় রাইসা সাইকেল চালাতে পারে কি না? রাইসা পারে না বললে সেদিনই রাজ ভাইয়ের অফিসের ছাদে সাইকেল চালানো শেখানো হয় ওকে। যখন ছবির শুটিং শুরু হয় তখন রাইসা পড়ত ক্লাস থ্রিতে।’
রোখসানা বেগম আরো বলেন,‘আমি রাজ ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ। তাঁর জন্যই আমার মেয়েটা এত প্রশংসা পাচ্ছে।’
শুটিংয়ের সময় সবার কাছ থেকে চকলেট পেয়েছে রাইসা। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে রাইসা বলে, ‘আমাকে সবাই অনেক আদর করত। মামা (রাজ), দাদি (সাবেরী আলম) আমাকে অনেক চকলেট দিয়েছে। তাহসান আংকেল ও শ্রাবন্তী আন্টিও অনেক চকলেট খেতে দিয়েছে আমাকে। সবার সঙ্গে অভিনয় করতে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।’
‘যদি একদিন’ ছবিটি রাইসার স্কুলের বন্ধু ও শিক্ষকরাও দেখেছে বলে জানায় রাইসা। সে বলে, ‘স্কুলের সবাই ছবিটা দেখে সুন্দর বলেছে। আমার প্রিন্সিপালও ছবিটা দেখেছেন। আমি খুব খুশি। খুব ভালো লাগছে।’
বড় হয়ে অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশার মতো হতে চায় রাইসা। সে বলে, ‘তিশা খালা মনির মতো আমি হতে চাই। অভিনয়ের পাশাপাশি লেখাপড়া মন দিয়ে করব।’
গত ৮মার্চ সারা দেশে মুক্তি পেয়েছে বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ‘যদি একদিন’। দেশের বাইরে আরো কয়েকটি দেশে মুক্তি পাবে ছবিটি। পরিচালক রাজ জানান, কানাডায় এই মাসেই মুক্তি পাবে ছবিটি। এ ছাড়া ছবিটি যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স ও ইতালিতেও মুক্তি পাবে শিগগিরই। ‘যদি একদিন’ ছবিতে তাহসান, শ্রাবন্তী, রাইসা ছাড়াও অভিনয় করেছেন ঢাকা অ্যাটাক খ্যাত অভিনেতা তাসকিন।