সবার খবর নিচ্ছেন এ টি এম শামসুজ্জামান

অনেকটা সুস্থ বোধ করছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান। গত সোমবার কেবিনে নেওয়া হয়েছে, দীর্ঘ ২৩ দিন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল তাঁকে। প্রিয়জনকে কাছে পেলে আনন্দে মেতে উঠছেন তিনি। গল্প করছেন, আবার সবাই খবরও নিচ্ছেন। এনটিভি অনলাইনকে এমনটিই জানিয়েছেন এ টি এম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনি জামান।
রুনি জামান বলেন, ‘এখন অনেকটাই ভালো আছেন তিনি। গত সোমবার কেবিনে নেওয়া হয়েছে। সময়মতো খাবার খাচ্ছেন। হাসছেন, কথা বলছেন। এমনকি আশপাশে সবার খবরও নিচ্ছেন। কে দেখতে এসেছিল, কে অসুস্থ সময়ে হাসপাতালে এসেছিল—এসব জানতে চাইছেন। ওই তো, সেদিন নায়িকা পপি এসেছিল। প্রথমে তো রাগ করে ছিলেন। বকাও দিয়েছেন। তার পর পরই পপির সঙ্গে মেতে ওঠেন আড্ডায়। আসলে সব সময়ই আড্ডা পছন্দ করেন। আশপাশটা সব সময় গরম করে রাখতে পছন্দ করেন। সবাই দোয়া করবেন, তিনি যেন আবারও কাজে ফিরতে পারেন।’
বর্তমানে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বরেণ্য অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান। অধ্যাপক মতিউল ইসলামের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
মলমূত্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার রাতে অসুস্থ বোধ করেন এ টি এম শামসুজ্জামান। শ্বাসকষ্টও শুরু হয় তাঁর। এরপর সেদিন রাত ১১টায় পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বর্ষীয়ান এই অভিনেতাকে। গত ২৭ এপ্রিল দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তাঁর ফুসফুসে অস্ত্রোপচার করা হয়। ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয় তাঁর। এরপর ৩০ এপ্রিল তাঁকে প্রথম লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। পরে লাইফ সাপোর্ট খুললে আবারও অসুস্থবোধ করেন তিনি। ৬ মে আবারও তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়েছিল।
১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে ঢালিউডে যাত্রা শুরু হয় এ টি এম শামসুজ্জামানের। ‘জলছবি’ ছবিতে প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। ১৯৬৫ সালের দিকে অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭৬ সালে আলোচনায় আসেন তিনি।
২০১৫ সালে শিল্পকলায় অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক পান গুণী এই অভিনেতা। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন পাঁচবার। এ টি এম শামসুজ্জামান অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো ‘লাঠিয়াল’, ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’, ‘দায়ী কে?’, ‘ম্যাডাম ফুলি’, ‘চুড়িওয়ালা’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘মোল্লা বাড়ির বউ’ ইত্যদি।