ইনসাইড আউট, ছবি যেন শুধু ছবি নয়!

হলিউডের সফল এক বছর ছিল ২০১৫। বিভিন্ন ধাঁচের, বিভিন্ন ঘরানার সিনেমার চিত্রপট দিয়ে গেল বছর পরিচালকরা বাজিমাত করেছেন দর্শকের মন। এই দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই বিশ্ববিখ্যাত অ্যানিমেশন স্টুডিও ডিজনির পিক্সার। গেল বছরে তাদের ‘ইনসাইড আউট’ এবং ‘দ্য গুড ডাইনোসর’ সিনেমা দুটি মুক্তি পেলেও ‘ইনসাইড আউট’-এর ভিন্ন ঘরানার চিন্তাভাবনা, এককথায় একজন মানুষের অনুভূতিগুলোর অনুভূতি দর্শকের অনুভূতিকেও তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
পিক্সারের শুরুটা হয়েছিল পুরোনো হয়ে যাওয়া একদল পুতুলের গল্প নিয়ে। মাঝে পর্দায় এসেছে হারিয়ে যাওয়া একটি মাছকে খুঁজে পাওয়ার অভিযান, সাধারণ এক পরিবারের দৈব ক্ষমতা কিংবা নিজের বহু পুরোনো স্বপ্নকে অবশেষে সার্থক করায় প্রবীণ এক মানুষের উচ্ছ্বাস। পিক্সার বরাবরই অভিনব সব ধারণার রূপায়ণ ঘটিয়েছে পর্দায়। এবারের কাজটা ছিল অনুভূতিকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা। কাজটি যে তারা সাফল্যের সঙ্গেই করতে পেরেছে, সে কথা নিশ্চয়ই বলতে হয় না। বক্স-অফিস থেকে চার কোটি ইউরো কেবল উপার্জন নয়, সে সঙ্গে অজস্র দর্শকের ভালোবাসা আর সমালোচকদের হাতখোলা প্রশংসা জুটেছে ছবিটির। নেহাত শিশুতোষ অ্যানিমেশনের খোলনলচে নয়, বরং বছরের সফলতম একটি পরিপূর্ণ চলচ্চিত্র হিসেবেই নিজের জায়গা করে নিয়েছে অনুভূতি নিয়ে কারবার করা এই ছবি।
সিনেমার মূল চরিত্র এগারো বছর বয়সী মেয়ে রাইলি। মৌলিক পাঁচটি অনুভূতি-আনন্দ, দুঃখ, বিতৃষ্ণা, ভয় ও ক্ষোভ দিয়েই গড়া তার অস্তিত্ব। এই অনুভূতিগুলোর কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাইলির মস্তিষ্ক।
রাইলিকে সব সময় হাসিখুশি রাখতে বদ্ধপরিকর আনন্দ, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল দায়িত্বও তার হাতে। রাইলির জন্মের সঙ্গেই জন্ম নেয় এই অনুভূতিগুলো। প্রতিদিনের জীবনে রাইলির কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা হয় ছোট ছোট স্মৃতির স্মারক, যেগুলোতে জমা থাকে রাইলির উচ্ছ্বাসময়, দুঃখ-ভারাক্রান্ত বা ভয়-তাড়িত স্মৃতিগুলো। এভাবেই আস্তে আস্তে বিভিন্ন অনুভূতি জড়িয়ে পড়ে মস্তিষ্কের বিচিত্র জগতে, এক রোমাঞ্চকর অভিযানে।
এ বছর অ্যানিমেশন ঘরানার আরো বেশ কয়েকটি সিনেমাও মুক্তি পেয়েছিল। ‘দ্য টেল অব দ্য প্রিন্সেস কাগুয়া’, ‘বিগ হিরো সিক্স’, ‘সং অব দ্য সি’ ছিল অন্যতম। তবে উপার্জন ও নির্মাণশৈলীর নিরিখে সব অ্যানিমেশনকে টেক্কা দিয়ে ইনসাইড আউট ছিল এদের মধ্যে শীর্ষে। বছর শেষে ইংল্যান্ডের বার্ষিক বক্স-অফিস তালিকায় ‘ইনসাইড আউট’-এর অবস্থান ছিল ৬ নম্বরে। প্রথম পাঁচটি সিনেমা ছিল বন্ড সিরিজের ‘স্পেক্টর’, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’, ‘অ্যাভেঞ্জারস : এইজ অব আলট্রন’, ‘মিনিয়নস’ এবং ‘ফিউরিয়াস সেভেন’।