কান ২০১৬ : আলোচনায় সেরা ৫ সিনেমা
অন্য যেকোনো চলচ্চিত্র উৎসবের মতোই কান উৎসবেও ভালো আর খারাপ বছর থাকে। তবে একটি বিষয়ে এই উৎসব সবসময়ই অনন্য—আর তা হলো বৈচিত্র্য। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে চলতি বছর, অর্থাৎ এই উৎসবের ৬৯তম আসরটি একটু বেশিই আকর্ষণীয়। মূল প্রতিযোগিতায় পেদ্রো আলমাদোভার, দ্য ডার্ডেন ব্রাদার্স এর মতো নাম, তারকাময় ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার; আর কী লাগে!
মার্টিন স্করসেসির ‘সাইলেন্স’, জেমস গ্রে’র অ্যামাজোনিয়ান এপিক ‘দ্য লস্ট সিটি অব জেড, অলিভার স্টোনের টেকনো-থ্রিলার ‘স্নোডেন’ আর বেন হুইটলি’র ‘ফ্রি ফায়ার হ্যাড অল’—সবই থাকছে এক মঞ্চে। দেখে শুনে মনে হচ্ছে যে এই চারটি সিনেমাকেই দেখা যাবে আসছে সেপ্টেম্বরে ভেনিস কিংবা টরন্টোতে। তবে এই চার সিনেমা ছাড়াও আছে আরো অনেক নজর কাড়া এন্ট্রি। ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ এর বিখ্যাত চলচ্চিত্র সমালোচক ‘টিম রবি’ আর ‘রবি কলিন’ এর বাছাই করা সেরা পাঁচটি সিনেমা নিয়ে এই আয়োজন।
১. দ্য বিএফজি
মার্ক রাইল্যান্সের সাথে স্টিভেন স্পিলবার্গের দ্বিতীয় কাজ এই সিনেমা। রোয়াল্ড ডালের গল্প অবলম্বনে নির্মিত এই সিনেমাটি এক অনাথ শিশু আর এক দৈত্যর কাহিনী। সিনেমাটির কানে প্রিমিয়ার হচ্ছে যুক্তরাজ্যে মুক্তি পাওয়ার ঠিক দুই মাস আগেই। স্পিলবার্গ অ্যান্ড কোং অবশ্যই অপেক্ষা করছেন বড় অর্জনের, কারণ একইভাবে গত বছর এই উৎসব থেকে প্রিমিয়ার হওয়া ‘ইনসাইড আউট’ দিয়ে তিনি কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন পর্দা আর বক্স অফিস।
২. দ্য নিওন ডেমন
কান উৎসবের রোলার-কোস্টার পাল্লায় অভিজ্ঞ খেলোয়াড় নিকোলাস উইন্ডিং। প্রতিযোগী থেকে বিচারক—উৎসবে দুই ভূমিকায়ই কাজ করেছিলেন তিনি। ২০১১ সালে কানে ‘ড্রাইভ’ দিয়ে জানান দিয়েছিলেন প্রতিভার, কিন্তু দুই বছর পরই ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে ছবি ‘গড ফরগিভস’-এর কারণে নিন্দিত হয়েছিলেন। তবে সাইকো-হরর ‘দ্য নিওন ডেমন’, যা বলবে মানুষখেকো মডেলদের গল্প আর সাথে থাকছে এল ফ্যানিং, ক্রিস্টিনা হেন্ড্রিকস আর কেন্যু রিভস এর মতো অভিনেত্রীরা—এসব মিলিয়ে দারুণ প্রত্যাবর্তন হতে পারে নিকোলাসের। ‘দ্য নিওন ডেমন’ এবারের উৎসবে পুরোই গরমা গরম!
৩. দ্য নাইস গাইজ
শেইন ব্ল্যাকের গল্পে আর পরিচালনায় তৈরি ‘দ্য নাইস গাইজ’। ১৯৭০ সালের লস অ্যাঞ্জেলেসের হারিয়ে যাওয়া এক বালিকাকে ঘিরে আবর্তিত হয় সিনেমার গল্প। ছবিতে বাউন্টি হান্টার আর প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরের চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাসেল ক্রো এবং রায়ান গসলিং। পরিচালকের খ্যাতি আর ইতিহাস বিবেচনা করে ‘দ্য নাইস গাইজ’ এর সাফল্য নিয়ে নিশ্চিত অনেকেই, কারণ ২০০৫ সালে শেইন ব্ল্যাক তাঁর সর্বপ্রথম পরিচালনা ‘কিস কিস ব্যাং ব্যাং’ দিয়ে মাত করেছিলেন কানের মঞ্চ। কাজেই এই উৎসব তো তাঁর জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনতেই পারে।
৪. আমেরিকান হানি
ব্রিটিশ পরিচালক আন্দ্রিয়া আর্নল্ডের সিনেমাগুলো বহুল পরিচিত আন্তরিক নির্মাণ আর সামাজিক-বাস্তবিক ফোকাসের জন্য। বলা যায় তাঁর ‘রেড রোড’ এবং ‘ফিশ ট্যাং’ সিনেমার কথা। এবার নিজের সেই ধারায় কিছুটা পরিবর্তন এনে আন্দ্রিয়া উপহার দিতে চলছেন ভিন্ন এক গল্প, যার অন্যতম আকর্ষণ ১৯ বছর বয়স্ক নবাগতা সাশা লেন। পাম দি’অর এর দাবিদার মাত্র তিনজন নারী নির্মাতার মধ্যে অন্যতম একজন হিসেবে তিনি থাকছেন এবারের কানের স্পটলাইটে।
৫. স্টেয়িং ভার্টিক্যাল
কানের স্ক্যান্ডাল নিয়ে অনুসন্ধিৎসু যারা, তাদের খুব বেশি খোঁজা খবর না করে, শুধু আলা জেরাদির এই সিনেমা দেখে নিলেই চলবে। উদীয়মান এই ফরাসি নির্মাতার সিনেমার ট্রেডমার্কই যে চোখ জুড়ানো ‘এক্সপ্লিসিট কন্টেন্ট’, হিচকক স্টাইলের রুদ্বশ্বাস গল্প আর স্যুরিয়াল বর্ণনা। ‘স্টেইং ভার্টিক্যাল’ গল্প বলবে এক সৃষ্টিশীল চলচ্চিত্র নির্মাতার, এক সিঙ্গেল প্যারেন্ট আর এক অজানা সমকামীর। এদের ঘিরে ঘটে যাওয়া নানা নাটকীয়তা আর পরিচালকের মুন্সিয়ানা, দুয়ে মিলিয়ে নিশ্চিতভাবেই মন জুগিয়ে নেবে সবার।