চঞ্চল চৌধুরীর ‘ফেউ’ : মুক্তি ২ সিজনে
শরনার্থী ও রাজনীতি, একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেনো সব স্বার্থ হাসিলের পাঁয়তারা। ১৯৭৯ সালে জানুয়ারি থেকে মে মাসে সুন্দরবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাও আলাদা কিছু নয়। মানবতাকে নৃশংসভাবে খুন করার মধ্য দিয়ে সেদিন রচিত হয় মরিচঝাঁপি গণহত্যার ইতিহাস। এই সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে অরিজিনাল সিরিজ ‘ফেউ’। ওয়েব সিরিজটি নির্মাণ করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টিজার প্রকাশ করলেও কোনো চরিত্র প্রকাশ করা করেনি। তবে এনটিভি অনলাইন সিরিজ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানেছে, এই সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। এছাড়া আরও অভিনয় করেছেন মোস্তারিজ নূর ইমরান, তারিক আনম খানসহ একঝাক তরুণ সিরিজটিতে অভিনয় করছেন।
ইতিহাসের অনুপ্রেরণায় নির্মিত হয়েছে ওয়েব সিরিজ ‘ফেউ’। এর গল্প লিখেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান, রোমেল রহমান এবং চিত্রনাট্য করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান, সিদ্দিক আহমেদ। ইতিহাসের সঙ্গে নিজের দেখা চরিত্র, নিজের জানা ঘটনা, নিজের অঞ্চলের গল্প সিরিজে তুলে ধরেছেন বলে জানান নির্মাতা।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, সিরিজটি দুই সিজনে মুক্তির পরিকল্পনা করেছে চরকি। ১২ পর্বের এই সিরিজের প্রথম সিজন মুক্তি পাবে আগামী ৩০ জানুয়ারি। পরবর্তীতে সিরিজের দ্বিতীয় সিজন পাঁচ পর্বে মুক্তি পাবে।
যেহেতু সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘ফেউ’। চলুন জেনে নেই কী সেই সত্য ঘটনা!
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগণা জেলার দ্বীপ মরিচঝাঁপি। দেশ ভাগ ও মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক মানুষ শরণার্থী হয়ে ইন্ডিয়ায় পাড়ি দিয়েছিল। নানা ঘাত–প্রতিঘাত পেরিয়ে নিম্নবর্ণের (নমঃশূদ্র) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটা অংশ এসে আশ্রয় নেন মরিচঝাঁপিতে। সরকারি আশ্বাসেই সেখানে আবাস গোড়ে তোলেন তারা। কিন্তু ভোটের আগের রাজনীতি রূপ পাল্টায় ভোটের পরে। শুরু হয় উদ্বাস্তু উচ্ছেদ।
শরণার্থী উচ্ছেদ করতে মরিচঝাঁপিতে খাবার ও পানি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, ঘরে আগুন দেয়া, নৌকা ডুবানোসহ নির্বিচারে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটে। এতে করে তৎকালীন ভারতের রাজ্য সরকার নিন্দিত হলেও কিছু আসে–যায়নি তাদের। ১৯৭৯ সালের ১৬ মে তারা মরিচঝাঁপিকে উদ্বাস্তু শূন্য করতে সক্ষম হন। সরকারি হিসেবে, সেখানে মোট নিহতের সংখ্যা মাত্র দুই জন হলেও বিভিন্ন হিসেবে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়।
এই ইতিহাসের অনুপ্রেরণায় নির্মিত হয়েছে ওয়েব সিরিজ ‘ফেউ’। নির্মাতা সুকর্ন সাহেদ বলেন, ‘সুন্দরবনে তো অনেক গল্প; বনবিবির গল্প, ডাকাতের গল্প, স্থানীয় মিথ। কিন্তু আমি খুঁজেছি ওই অঞ্চলের রাজনীতি। সেখান থেকেই গল্পটি নিয়ে কাজ করা।’