গরুর মাংস কারা খাবেন, কারা খাবেন না
গরুর মাংস পুষ্টি উপাদানে ভরপুর একটি খাবার। তবে লিন বিফ হতে হবে। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে গরুর মাংসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে গরুর মাংসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বলেছেন পুষ্টিবিদ সুরাইয়া নাজনীন তুলি।
পুষ্টিবিদ সুরাইয়া নাজনীন তুলি বলেন, ১০০ গ্রাম গরুর মাংস থেকে ৪৯৮-৫১৫ কিলোক্যালোরি পেয়ে থাকি। ১০০ গ্রাম গরুর মাংস থেকে ২.৬ গ্রাম ফ্যাট এবং ২২.৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। যাঁরা আনহেলথি পেশেন্ট, তাঁরা সপ্তাহে দু-তিন দিন দুই থেকে তিন টুকরো করে গরুর মাংস খেতে পারেন। ফ্যাট ও প্রোটিন ছাড়াও গরুর মাংসে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল, যেমন সেলেনিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি।
সুরাইয়া নাজনীন তুলি বলেন, গরুর মাংসে প্রচুর আয়রন রয়েছে। যেসব রোগী রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য গরুর মাংস বেশ উপকারী। যাঁরা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন, তাঁরা যদি একটানা এক সপ্তাহ গরুর মাংস খেয়ে থাকেন, দেখা যাবে তাঁদের রক্তস্বল্পতা অনেকাংশে কমে এসেছে। এ ছাড়া গরুর মাংসে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস যথেষ্ট পরিমাণে থাকায় এটি হাড়ের জন্য বেশ উপকারী।
এ পুষ্টিবিদ আরও বলেন, গরুর মাংসে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাঁরা কম করে গরুর মাংস খাবেন। গরুর মাংসের রানের অংশে ফ্যাটের পরিমাণ কম, তাই তাঁরা রানের অংশ নির্বাচন করতে পারেন। গরুর মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকায় এটি কিডনি রোগীদের এড়িয়ে চলা ভালো। গরুর মাংসে পিউরিন থাকায় এটি ইউরিক অ্যাসিড বাড়িয়ে দেয়। তাই যাঁদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি এবং গাউট রোগ রয়েছে, তাঁরা গরুর মাংস এবং এর ঝোল পর্যন্ত খেতে পারবেন না।
পুষ্টিবিদ সুরাইয়া নাজনীন তুলির পরামর্শ, তিন আউন্স বিফ থেকে প্রায় ৩০ শতাংশ জিঙ্কের ঘাটতি পূরণ সম্ভব। বাড়ন্ত শিশু-কিশোরীদের ক্ষেত্রে জিঙ্ক খুবই উপকারী। তাই তাঁদের আমরা সপ্তাহে এক-দুদিন বিফ দিতে পারি। গরুর মাংসে ফ্যাট, সোডিয়াম, কোলেস্টেরল বেশি থাকায় এটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। যাঁরা দীর্ঘদিন গরুর মাংস খান, তাঁদের ক্যানসারের প্রবণতাও বেশি দেখা দেয়।
সুরাইয়া নাজনীন তুলি যুক্ত করেন, গরুর মাংসে ভিটামিন বি১২ যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে, যা নার্ভার সিস্টেমকে সহায়তা করে এবং ভিটামিন বি৬ ব্লাড ফরমেশনে সহায়তা করে। তাই আমরা গরুর মাংস খেতে পারি, যাঁদের শরীরে অন্য কোনও প্রবলেম নেই, তাঁরা সপ্তাহে এক থেকে দুদিন তিন আউন্স পরিমাণ বা দুই থেকে তিন টুকরো খেতে পরি। এ ছাড়া যাঁদের কিডনি সমস্যা, হাইপারটেনশন, হৃদরোগ ইত্যাদি রয়েছে, তাঁরা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলবেন।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।