রমজানের উপকারিতা
সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। রোজার যেমন মানসিক উপকারিতা রয়েছে, তেমনই শারীরিক উপকারিতাও রয়েছে। দিনের বেলায় কম খাদ্য গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে রমজানের উপকারিতা সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে রমজানের উপকারিতা সম্পর্কে বলেছেন বিআরবি হসপিটাল লিমিটেডে ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চিফ কনসালটেন্ট ডা. এম এ বাশার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
রমজানের অনেক উপকারিতা রয়েছে। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা করা হয়ে থাকে। আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের এবং সর্বাঙ্গীন আমরা যদি বলি, আমাদের দেহের ক্ষেত্রে আসলে কী কী উপকারিতা রয়েছে এ রমজান মাসে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. এম এ বাশার বলেন, আপনারা সবাই জানেন, আমরা সবাই সুস্থ থাকতে চাই। ভালো থাকতে চাই। সে জন্য আমাদের খাবারের প্রয়োজন। কিন্তু খাবারটা কীভাবে খাব বা কী পদ্ধতিতে খাওয়া দরকার, সেটাও কিন্তু সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় খাবার না খেয়েও কিন্তু সুস্থ থাকা যায়। রমজান মাসে আমরা খাওয়ার যে অভ্যাসটা পরিবর্তন করি, সে পরিবর্তনের ফলে দেখা গেছে, এটা কিন্তু আমার নিজের কথা না, এটা প্রমাণিত, বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত।
ডা. এম এ বাশার বলেন, শতবারের বেশি গবেষণা হয়েছে রমজানের উপকারিতা নিয়ে। এটা কিন্তু সমস্ত মানুষের জন্যই। মুসলমানদের জন্য এটা ফরজ, অন্যান্য মানুষও ফাস্টিং করে বিভিন্ন উপায়ে। এর কিন্তু অনেক উপকার আছে। নিয়ম মেনে যদি কেউ ফাস্টিং করে বা রোজা রাখে, তাহলে হাইপারটেনশন অনেকটা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং অ্যান্টি-হাইপারটেনটিসভ ড্রাগস রেগুলারলি যে ডোজে খায়, ডোজটা কিন্তু অনেকটা কমে যায়। ডায়াবেটিসে আমাদের ওষুধের যে মাত্রা, সেটা কমিয়ে দিতে হয়। শরীরের ওজন অনেকটা কমে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বৃদ্ধি হয় নিজের জন্য, কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেখে গেছে ওজন কমে যায়। আরেকটা হলো যে সাইকোলজিক্যাল। সেন্স অব ওয়েল বিং, এটা কিন্তু প্রতিষ্ঠিত হয়। স্পিরিচুয়াল বেশ কিছু বেনিফিট আছে।
ডা. এম এ বাশার আরও বলেন, প্রত্যেকটা রোগের ট্রিটমেন্টের জন্য কয়েকটা স্ট্র্যাটেজি ফলো করি, যেমন লাইফস্টাইল মোডিফিকেশন। খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে কী খাওয়া যাবে, কী খাওয়া যাবে না, এক্সারসাইজ, স্মোকিং প্রিভেনশন, অ্যালকোহল কনজাম্পশন বন্ধ করা, মেডিটেশন; এগুলোর সবকিছুই রমজানে আমরা রোজার মাধ্যমে করতে পারি। আমরা সারা দিন রোজা রাখার পরে ইফতার করি, প্রেয়ার ঠিকমতো করি, আমরা দিনের বেলায় স্মোক করি না এবং মদ্যপানের তো প্রশ্নই ওঠে না। এসব বিধিনিষেধের ফলে হয় কি, আমাদের শরীরে অটোফেজি, অটোফেজি গবেষণা করে জাপানি এক সেল বিশেষজ্ঞ নোবেল প্রাইজ পেয়েছে। দেখা গেছে যে আমাদের শরীরে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন সেল আছে, সেল হলো মেটাবলিজমের একটা কারখানার মতো। সেখানে অনেক সেল নষ্ট হচ্ছে, ফ্রি রেডিক্যালস তৈরি হচ্ছে। এগুলো আবার রিসাইক্লিং হচ্ছে। রোজার মাধ্যমে হয় কি, অটোফেজি সিস্টেমটা অ্যাক্টিভেট হয়ে যায়। অ্যাক্টিভেট হলে যেগুলো ড্যামেজড সেল, সেগুলো আবার রিপেয়ার হয়।
রমজানের উপকারিতা সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।