বাচ্চাদের কি এসিডিটি হয়?

এসিডিটি কেবল বড়দের নয়, বর্তমানে বাচ্চাদেরও হতে পারে এসিডিটি। বর্তমানে বাচ্চারা বাসায় তৈরি খাবার খেতেই চায় না। আবার মা-বাবারাও এখন এত ব্যস্ত থাকেন যে বাচ্চাদের জন্য বাসায় ভালো মজাদার ও আকর্ষণীয় খাবার তৈরি করা সব সময় সম্ভব হয় না। তাই বাচ্চারা বায়না ধরলে আমরা নিয়ে যাই ফাস্টফুডের দোকানে।
বাচ্চাদের এই ফাস্টফুড খাওয়ার প্রবণতার কারণে দিন দিন এসিডিটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া স্কুল থেকে বের হলেই বাচ্চারা বায়না ধরে ঝালমুড়ি, ফুচকা, চটপটি ইত্যাদি খাওয়ার। এগুলো থেকেও অনেকে এসিডিটিতে ভোগে। এসিডিটির জন্য মানসিক চাপও দায়ী। আজকাল শিশুদের কোনো বিনোদন নেই, আছে কেবল বইয়ের বিশাল বোঝা। স্কুলের পড়া, প্রাইভেট, কোচিং আর সব সময় পরীক্ষায় ভালো করার জন্য মা-বাবার তাড়া খেয়ে বাচ্চাদের নিজেদের ওপর বিশ্বাস তো কমছেই, তার ওপর মানসিকভাবে চাপেও থাকছে। আর এই চাপে থাকার কারণে তাদের এসিডিটিও বাড়ছে। এসিডিটি বেশি বেড়ে গেলে তা থেকে পেটের আলসার বা পেপটিক আলসার রোগ হতে পারে। তবে আগে থেকে প্রতিকার জানা থাকলে এই জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
চিকিৎসা ও প্রতিকার
বেশ কিছু ওষুধ আছে এসিডিটি কমাবার। এইচ২ ব্লকার, যেমন—রেনিটিডিন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে একই ওষুধ সব বয়সের জন্য প্রযোজ্য নয়, তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বড়দের গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বাচ্চাদের খাওয়াবেন না।
যেসব শিশুর এসিডিটির সমস্যা আছে, তাদের ফাস্টফুড, ঝালমুড়ি, চটপটি, ফুচকা ইত্যাদি খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করুন। অন্যদিকে এইচ পাইলোরি থেকে বাঁচতে বিশুদ্ধ ও পরিষ্কার পানি ও খাবার দিন। নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করান। বাচ্চাকে রাস্তার পাশের খাবার খাওয়াবেন না।
শিশুদের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় নিয়ম মেনে চললেই রোগটি আর হয় না। এতে দীর্ঘমেয়াদি ওষুধেরও প্রয়োজন হয় না। তাই এই রোগ প্রতিরোধে মা-বাবারা যত বেশি সতর্ক হবেন, ততই মঙ্গল।
লেখক : রেজিস্ট্রার, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।