শীতে শিশুর নিউমোনিয়া, লক্ষণ কী

এই শীতে ঠান্ডাজনিত কারণে অনেক বাচ্চাই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। তাই আগে থেকে প্রস্তুতি নিলে, অর্থাৎ নিউমোনিয়ার লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়গুলো জানা থাকলে আপনার সন্তানকেও এই রোগ থেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।
নিউমোনিয়ার লক্ষণ
* কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর
* দ্রুত নিশ্বাস
* পাঁজরের নিচের অংশ ভেতরের দিকে দেবে যাওয়া।
ওপরের লক্ষণগুলো ছাড়াও শিশু খেতে না পারলে, বুকের ভেতর শব্দ হলে, শিশু নিস্তেজ হয়ে গেলে এবং খিঁচুনি হলে বুঝতে হবে শিশুটি মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এ ক্ষেত্রে শিশুকে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে নিতে হবে। কাশির মাত্রা বেশি হলে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, সব সর্দি-কাশি নিউমোনিয়া নয় এবং অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো প্রয়োজন নেই।
শ্বাসকষ্ট বোঝার উপায়
দুই মাসের কম বয়সী শিশুদের শ্বাস নেওয়ার হার মিনিটে ৬০ বারের বেশি, দুই মাস থেকে ১২ মাস বয়সী শিশুদের মিনিটে ৫০ বারের বেশি এবং ১২ মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুর মিনিটে ৪০ বারের বেশি শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে তাকে শ্বাসকষ্ট বলা হয়। এর সঙ্গে শিশুর বুকের পাঁজরের নিচের অংশ দেবে গেলে, সেটি নিউমোনিয়ার লক্ষণ।
কখন হাসপাতালে নেবেন
যদি এমন হয়, শিশু বুকের দুধ, পানি বা কিছুই খায় না, সবকিছুই বমি করে দেয় (দু-একবার বমি করলে ভয়ের কিছু নেই)। শিশু অজ্ঞান হয়ে গেলে, খিঁচুনি হলে।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায়
যেকোনো রোগের মতো নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করাটাও বেশি জরুরি। এতে শিশুর কষ্ট লাঘব হবে। শিশুর নিউমোনিয়া প্রতিরোধে সবার আগে বুকের দুধ খাওয়ানো নিশ্চিত করতে হবে। জন্মের পর এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে শালদুধ দিন এবং ছয় মাস পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ পান করান।
* বারবার হাত ধোবেন, বিশেষ করে শিশুকে কোলে নেওয়ার আগে।
* ঘরে, বিশেষ করে শিশুর সামনে ধূমপান করবেন না।
* রান্নাঘর ও শোয়ার ঘরের দরজা-জানালা খুলে রাখুন, যাতে করে রান্নার ধোঁয়া ঘরে আটকে না থাকে।
* এক বছরের মধ্যে সময়মতো শিশু সব টিকা, বিশেষ করে নিউমোনিয়ার টিকা দিন।
লেখক : রেজিস্ট্রার, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।