অপরিণত নবজাতকের রেটিনায় কী সমস্যা হতে পারে?

অপরিণত বয়সে শিশু জন্ম নিলে অনেক সময় রেটিনার সমস্যা হতে পারে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬০০তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. এস বি রাসেল। বর্তমানে তিনি ভিশন আই হসপিটালের রেটিনা বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রশ্ন : রেটিনার কাজ কী? এই জিনিসটি কী?
উত্তর : চোখের বিভিন্ন অংশ আছে। এর মধ্যে চোখের তিনটি লেয়ার থাকে। তিনটি লেয়ারের মধ্যে রেটিনা একটি লেয়ার। চোখের এই অংশগুলোর মধ্যে একটি হলো কর্নিয়া। চোখের সামনে থাকে। আরেকটি চোখের লেন্স থাকে। লেন্সের পেছনে সর্বশেষ থাকে রেটিনা, যেখানে চোখের ছবি তৈরি হয়। এর মাধ্যমে মানুষ চোখে দেখতে পারে। যেমন ক্যামেরার ফিল্ডটা গুরুত্বপূর্ণ। ক্যামেরার তো লাইট ভালো, যদি ফিল্ড ভালো না থাকে, ছবি তৈরি হবে না। চোখের রেটিনাকে আয়না বলা হয়। এখানে ছবি তৈরি হয়। এটি যদি ভালো না হয়, দেখাটাও ঠিক হবে না।
প্রশ্ন : নবজাতকরা রেটিনার কী কী সমস্যা নিয়ে জন্ম নিতে পারে?
উত্তর : এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। ইদানীং আমরা পাচ্ছি অনেক বাচ্চাই খুব অপরিণত বয়সে জন্ম নিচ্ছে। সাধারণত বাচ্চা ১০ মাসে হওয়ার কথা। কিন্তু যেসব বাচ্চা সাত-আট মাসে হয়ে যাচ্ছে, ছয় মাসে কোনো কারণে হয়ে যাচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে অনেক সময় হয়ে যাচ্ছে বা অনেকর সময় সিজার করতে হচ্ছে, তখন অপরিণত শিশু হয়।
আমাদের দেশের বাচ্চাদের ওজন হওয়া উচিত দুই কেজির ওপরে বা আড়াই কেজি। কিন্তু এই বাচ্চাগুলো যদি দুই কেজির নিচে হয়, সাধারণত এক কেজি, দেড় কেজি বাচ্চা হচ্ছে এখন, এসব বাচ্চার বৃদ্ধি ভালো হয় না। কারণ, ১০ মাস যেই বাচ্চার গর্ভে থাকার কথা, সেই বাচ্চা আগেই বেরিয়ে আসছে। তাই তার দেহের কোনো অঙ্গই পরিপূর্ণভাবে গঠন হয় না। যেমন তার মস্তিষ্কও পরিপূর্ণতা লাভ করে না, ফুসফুসও পরিপূর্ণতা পায় না, স্বাভাবিকভাবে তার চোখও তৈরি হয় না। চোখের অন্যান্য অঙ্গ পুরোপুরি বৃদ্ধি পেয়ে যায়। কিন্তু চোখের যে রেটিনার অংশটা, জন্মের পরও এর কিছুটা বৃদ্ধি হয়। এসব বাচ্চা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জন্ম নেয়। বাচ্চা যদি আগেই জন্ম নেয়, এই বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। রেটিনার যে পুরোপুরি বৃদ্ধিটা, এটা অপরিপক্ব থাকে। এই বাচ্চাগুলো সব দিক দিয়ে অপরিপক্ব। সে শ্বাস ভালো নিচ্ছে না, মস্তিষ্ক ভালোভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এই বাচ্চাগুলো জন্মের পরপরই এনএসইউতে চলে যায়। ওখানে গিয়ে তার উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন পায় জীবন বাঁচানোর জন্য। এখন তার লক্ষ্য হলো জীবন বাঁচানো। কিন্তু এখানে তার যেহেতু উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে, এটাতে তার জীবন বাঁচছে। কিন্তু এই উচ্চমাত্রার অক্সিজেনটা চোখের রেটিনার জন্য প্রতিবন্ধক। উচ্চমাত্রার অক্সিজেনের কারণে রেটিনাটা পুরোপুরি বৃদ্ধি হয় না। পুরোপুরি বৃদ্ধি না পাওয়ার কারণে রেটিনার ভেতর যে রক্তনালি আছে, স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় না।