শিশুর ডায়রিয়ায় কী করবেন?

ডায়রিয়া খুব প্রচলিত রোগ হলেও সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এ থেকে মৃত্যুর ঝুঁকিও হতে পারে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬০৮তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. ইফতেখার উল হক খান। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে শিশু বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে কী কী লক্ষণ দেখলে কেবল ঘরেই চিকিৎসা করবে? আর কী কী লক্ষণ দেখলে শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নেবে?
উত্তর : আমি প্রথমে যেটি বলব, যদি বাচ্চা বুকের দুধ খেয়ে থাকে, তাকে বুকের দুধ সঠিকভাবে নিয়মিত খাইয়ে যেতে হবে। ছয় মাসের নিচের বাচ্চা শুধু বুকের দুধ খাবে। আর ছয় মাস-পরবর্তী বাচ্চাদের বুকের দুধ চলবে, পাশাপাশি অন্যান্য স্বাভাবিক খাবার—বাচ্চাটি যেটি পাচ্ছিল, এটা খেয়ে যাবে।
আর আমরা যেটা বলি, সে হয়তো স্বাভাবিকভাবে দু-তিনবার খাচ্ছিল, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে এটা বাড়িয়ে দিতে হবে। হয়তো পাঁচ বা ছয়বার দেওয়া লাগবে। যদিও সে খেতে চাইবে না। তাকে অবশ্যই এটি দিতে হবে।
আর তাকে ঘন ঘন খাবার স্যালাইন দিতে হবে। যদিও সে খেতে চাইবে না, তবে অবশ্যই খেতে হবে। অবশ্যই প্রতিবার খাবারের পর স্যালাইন দিতে হবে। যেই পানিটা বেরিয়ে যাচ্ছে, সেটা পূরণের জন্য অবশ্যই স্যালাইন দিতে হবে।
প্রশ্ন : কী পরিমাণ স্যালাইন দেবে?
উত্তর : এ ক্ষেত্রে আমরা বলি, দুই বছরের নিচের বাচ্চার ক্ষেত্রে ৫০ থেকে ১০০ এমএল খাবে, প্রতিবার বমি বা পাতলা পায়খানার পর এটা দেবে। বমি ও পাতলা পায়খানার পরে খাওয়াবে।
একটি গ্লাসে মোটামুটি আড়াই আউন্স থাকে। সে ক্ষেত্রে ছোট একটি বাচ্চা, দুই বছরের নিচের একটি বাচ্চার ক্ষেত্রে মোটামুটি আধা গ্লাস থেকে এক গ্লাস খেতে হবে। দুই বছর থেকে ১০ বছরের আগের একটি বাচ্চার ক্ষেত্রে এক গ্লাস থেকে দুই গ্লাস খাওয়াবে, আর ১০ বছর যদি শিশুর বয়স হয়ে থাকে, যতটা পারে ততটা খাবে।
প্রশ্ন : গরমের সময়ের ডায়রিয়ার তুলনায় শীতে ডায়রিয়ার পার্থক্য কী?
উত্তর : এখন আসলে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশের ডায়রিয়াগুলো বেশির ভাগ হয় শীতকালে, ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া বেশি হয়। এগুলো বেশির ভাগ পানিবাহিত নয়, যার জন্য শীতকালে রোটা ভাইরাস ডায়রিয়াতে প্রচণ্ডভাবে আক্রান্ত হচ্ছে সারা দেশে। মোটামুটি একটি মহামারী আকারে হচ্ছে।
রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া। দেখা যাচ্ছে এটি ছয় মাসের পর থেকে হচ্ছে, দুই বছর থেকে তিন বছরের বাচ্চাদের হচ্ছে, প্রাথমিক অবস্থায় শুধু বমি নিয়ে আমাদের কাছে আসছে। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমে যাচ্ছে। কিন্তু পাতলা পায়খানা শুরু হচ্ছে এবং মারাত্মক আকারে হচ্ছে অনেক সময়। আর শিশুকালে যে ডায়রিয়া হচ্ছে, এর বেশিরভাগই হয় পানিবাহিত বা অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে। এগুলো সাধারণত বর্ষা ঋতুতে বা গ্রীষ্মকালে হয়।