শিশুদের পায়ে ব্যথায় প্রাথমিকভাবে কী করা হয়?

শিশুদের বিভিন্ন কারণে পায়ে ব্যথা হয়। পায়ে ব্যথার কারণ অনুযায়ী এর চিকিৎসা করা হয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬৭৬তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. আহমেদ নাজমুল আনাম। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিশু কার্ডিওলজি বিভাগে কর্মরত।
প্রশ্ন : তখন আপনারা প্রাথমিকভাবে কী করেন?
উত্তর : আমরা প্রথমে দেখি এটি গ্রোইং পেন বা ওই ধরনের কি না। আমরা যদি শারীরিকভাবে পরীক্ষা করি, ইতিহাস নেই, যদি আমাদের জয়েন্টটা ফোলা থাকে এবং জটিল কিছু ইতিহাস থাকে, যেমন , বাতজ্বর বা রিউম্যাটিক ফিবারের ক্ষেত্রে কিছু পয়েন্ট আমরা দেখি। প্রথমে বাচ্চা বলবে তার বড় জয়েন্টগুলো ব্যথা করছে। একটি জয়েন্টে ব্যথা ভালো হতে না হতেই আরেকটি জয়েন্ট আক্রান্ত করছে। রিউম্যাটিক ফিবারের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা বিষয়গুলো খেয়াল করি, বাচ্চার কাছে জিজ্ঞেস করি, নিজেরাও পরীক্ষা করার চেষ্টা করি। এ ছাড়া বাতজ্বর নির্ণয়ের জন্য কিছু বিষয় আছে। বড় পাঁচটি ক্রাইটেরিয়া আছে। একটি যেমন মাইগ্রেরেটোরি আরথ্রাইটিস। সেই সঙ্গে হার্টে কোনো সমস্যা আছে কি না, এটি আমরা দেখি। বাচ্চার কোরিয়া (সহজাত নড়াচড়া নয়) আছে কি না। পায়ে বা গায়ে কোনো লাল লাল দাগ উঠছে কি না। এ ছাড়া কোনো চাকা বা নডিউল আছে কি না, সেগুলো দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিই।
এই ক্লিনিক্যাল প্যারামিটার ছাড়াও আমরা ল্যাব ডায়াগনোসিস করার চেষ্টা করি। এখানে আমরা বাচ্চার এএসও টাইটার দেখি, সিএকটিভ প্রোটিন আমরা দেখি এবং ইসিজিতে আমরা দেখি কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কি না। সেগুলো করে আমরা মেলানোর চেষ্টা করি বাতজ্বরের কোনো লক্ষণ আছে কি না।
প্রশ্ন : যখন নিশ্চিত হন শিশুটি এই মুহূর্তে বাতজ্বরে আক্রান্ত, তার পর পর আপনাদের কী ধরনের পরামর্শ?
উত্তর : চিকিৎসার দুটো অধ্যায় আছে। একটি হলো প্রাইমারি প্রোফাইল এক্সেস, আরেকটি হলো সেকেন্ডারি প্রোফাইল এক্সেস। পেনিসিলিন বা বেনজাথিলিন পেনিসিলিন দিয়ে আমরা কোর্স দিয়ে দেই। সেই সঙ্গে ব্যথা কমানোর জন্য ইকোস্প্রিন ট্যাবলেট আমরা দেই। সেই সঙ্গে পরে যেন লক্ষণগুলো না হয়, তাকে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা দিতে হয়।
প্রশ্ন : এগুলো নির্ভর করে কিসের ওপর? কতদিন ধরে এই চিকিৎসা চলে?
উত্তর : তাহলে আমরা যেটি বলি যে এটি শুধু রিউমেটিক ফিবার, তাহলে আমরা চিকিৎসা দেব বেনজাথিন পেনিসিলিন দিয়ে। যদি ৩০ কেজির ওপরে হয়, তাহলে ১২ লাখ করে প্রতি তিন সপ্তাহ আমরা একটি করে দিতে বলব। বাচ্চার বয়স ২১ বছর হওয়া পর্যন্ত আমরা দিতে বলব।
যদি বাচ্চার রিউমেটিক ফিবারের সঙ্গে হার্টের কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে আমরা বলব, এই চিকিৎসা ৪০ বছর পর্যন্ত দিতে হতে পারে। আর যদি ভাল্ভে সমস্যা হয়, তাহলে এই চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। তবে যদি চিকিৎসা না হয়, জটিলতা হতে পারে। যদি চিকিৎসা নেওয়া হয়, তবে ঝুঁকি হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম।