শিশুর বিছানা ভেজানো কখন অস্বাভাবিক?

শিশুর রাতে বিছানা ভেজানোর সমস্যায় মা-বাবা খুব বিব্রতবোধ করেন। শিশুটির কাছেও বিষয়টি অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬৯৭তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. আহমেদ নাজমুল আনাম। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু কার্ডিওলজি বিভাগে কর্মরত।
প্রশ্ন : শিশুর বিছানা ভেজানো বলতে আমরা কী বুঝি?
উত্তর : একটি বাচ্চা পাঁচ থেকে ছয় বছর, মতান্তরে সাত বছর পর্যন্ত, রাতের বেলা বিছানায় প্রস্রাব করে। বিষয়টি সে না বুঝে করে। শিশু যদি পরপর তিন মাস সপ্তাহে দুই রাত মনের অজান্তে বিছানায় প্রস্রাব করে, তাহলে তাকে আমরা বেড ওয়েটিং বা বিছানা ভেজানোর সমস্যা বলি।
প্রশ্ন : কখন একে আমরা অস্বাভাবিক বলি?
উত্তর : আসলে এই জিনিসটি স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে মা-বাবাও চিন্তিত হয়ে যেতে পারেন। সাধারণত ছয় বছর বয়সের মধ্যে একটি মেয়ের বিষয়টি ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে আসে। তাদের আর বেড ওয়েটিংটা হয় না। আর সাত বছর বয়সের মধ্যে ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ ছেলেদের বিষয়টি ঠিক হয়ে যায়। তবে কিছু বাচ্চার এটা থেকে যেতে পারে। সাত বছর পর্যন্ত আমি বলব, এখানে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
তবে সাত বছর পর যদি কিছু হয়, এটা একটু অস্বাভাবিক। আমরা কিছু জিনিস ভাবি। তবে অবশ্যই বড় কোনো জিনিস আমরা ভাবব না। তবে আমরা বলব, বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ওই শিশুর ওই মুহূর্তে কম আছে। তবে অবশ্যই এটি আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।
প্রশ্ন : আপনাদের কাছে যখন মা-বাবারা আসেন, কী ধরনের অভিযোগ নিয়ে আসেন?
উত্তর : মা-বাবারা খুবই চিন্তিত থাকেন। তাঁরা বাচ্চাদের কোনো কোনো ক্ষেত্রে শাস্তিও দেন। একটু লজ্জায় থাকেন, তাঁদের বাচ্চার বিছানায় প্রস্রাব হয়ে যাচ্ছে এই ভেবে। আমরা প্রথমেই রোগীদের বলব, আপনারা এটি নিয়ে বিচলিত হবেন না। আপনার বাচ্চার ওপর কোনো ধরনের শাস্তি বা অন্যায় কিছু বা তিরস্কার করা—এগুলো করবেন না। আরেকটি যেটি সমস্যা হয়, বাচ্চা অনেক সময় ভয়ে ভয়ে থাকে, তার যে বন্ধুবান্ধব তারা বিষয়টি জেনে যাচ্ছে, তার মা-বাবা শেয়ার করছে এসব বিষয়ে। এতে তাদের আত্মসম্মানের ওপর মারাত্মক আঘাত পড়ে। সেটা কিন্তু এই সমস্যাকে আরো বাড়াতে পারে। সুতরাং প্রথমে আমরা মা-বাবাদের আশ্বস্ত করি। এরপর আমরা দেখি কোনো সমস্যার কারণে এটি হচ্ছে কি না।