শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য—কী করবেন?

কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিকারে পারিবারিক খাবারের প্রতি শিশুকে অভ্যস্ত করতে হবে। এ ছাড়া আরো কিছু কাজ কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে পারে।
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৬৮২তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. ছামিদুর রহমান। বর্তমানে তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : বাচ্চাদের অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য করণীয় কী।
উত্তর : এখানে আমরা দুটো জিনিস বিবেচনায় আনতে পারি। একটি হচ্ছে, যার হয়ে গেছে তার চিকিৎসা কী। আর যাতে না হয় সেই জন্য করণীয় কী।
প্রথম কথা হলো অভিভাবককে এই রকম ধৈর্য ধরতে হবে যে তার সমস্যাটা যতদিন হয়েছে, এটা ঠিক হতে তার চেয়ে বেশিদিন সময় লাগতে পারে। সুতরাং ঘন ঘন ডাক্তার পরিবর্তন করা, এই ডাক্তার থেকে আরেক ডাক্তারের কাছে যাওয়া—এখানে ছুটে বেড়ানো, ওখানে ছুটে বেড়ানোর দরকার নেই। এটার চিকিৎসা অনেকেই জানে।
পারিবারিক খাবারে আগে তাকে অভ্যস্ত করতে হবে। সে কী ধরনের খাবার খেত একে আগে পর্যালোচনা করে, পারিবারিক খাবারের প্রতি তাকে অভ্যস্ত করতে হবে। টয়লেট ট্রেনিং তাকে দেওয়াতে হবে, যাতে প্রতিদিন সে নির্দিষ্ট একটি সময়ে বাথরুমে বসে। সাধারণত রাতে খাবার টেবিলে মা-বাবা থাকেন। তাহলে সে সময় মা-বাবার সাপোর্টে সে কিন্তু একটি অভ্যাস করতে পারে। এ ছাড়া ব্যথা কমানোর জন্য বাজারে কিছু অয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায়। এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। অবশ করার কিছু ওয়েনমেন্ট আছে। যেমন জেসোকেন জেলি। বাচ্চার যখন পায়খানার বেগ হবে, পায়খানার রাস্তায় ওই জেলিটা যদি দিয়ে দেয়, জায়গাটা একটু অবশ হবে, পিছলা হবে। পাশাপাশি পায়খানাকে নরম করার জন্য, বাজারে অনেক ধরনের ওষুধ আছে সেগুলো খাওয়ালে আস্তে আস্তে ডোজ সমন্বয় করে দিতে হবে। পাশাপাশি আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। যদি ফল খায়, খোসাসহ খাবে। এগুলো করলে এটা ঠিক হয়ে যাবে। আর প্রতিরোধের ব্যাপারে কাউন্সেলিং খুব গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম মাসখানেক জেসোকেন জেলি ব্যবহার করতে হবে। প্রথমবার পায়খানার সময় হয়তো ব্যথা করেছে। তবে পরেরবার যদি পায়খানা নরম হয়, ব্যথার পরিমাণ অনেক কমে যাবে। তখন আস্তে আস্তে প্রতিদিন বসতে বসতে সে দেখবে যে সে আর ব্যথা পায় না। নিয়মমতো ওষুধ খেলে এত বেশি শক্ত হওয়ারও সম্ভাবনা নেই। সে জন্য একটু সময় লাগবে। আবার এটাও ঠিক যে মাঝে মাঝে কিন্তু হবে। কারণ আমরা তো মানুষ। যখন সমস্যা থাকে না আমাদের যত্নটা কমে যায়। এটা মাথায় রাখতে হবে আমার বাচ্চা যদি দুই বেলা পোলাও খায়, তিনবার খাওয়ার সময় যেন সে শাকসবজিসহ একটি খাবার খায়। এই জিনিসটি খেয়াল রাখলে, ভারসাম্য বজায় রেখে চললে, আসা করা যায় এটা ঠিক হয়ে যাবে। বাচ্চাকে পারিবারিক খাবারে অভ্যস্ত করতে হবে। স্বাভাবিক প্রাকৃতিক খাবারে যেভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে, কখনো কৃত্রিম খাবার খেলে সেটি আসবে না। এই জিনিসগুলোর দিকে আমাদের একটু লক্ষ দেওয়া উচিত।