সোশ্যাল ফোবিয়া বা সামাজিক পরিস্থিতিতে ভীতি : কারণ কী?
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/04/21/photo-1492764057.jpg)
সোশ্যাল ফোবিয়া বা সামাজিক পরিস্থিতিতে ভীতি অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৭১৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন কামরুজ্জামান মজুমদার। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : সোশ্যাল ফোবিয়া বলতে কী বোঝানো হয়?
উত্তর : সোশ্যাল ফোবিয়া নামটি শুনতে একটু কঠিন লাগতে পারে। কারণ এটি ইংরেজি নাম। তবে বাংলায় বললে এটি আসলে খুব কঠিন নয়। সোশ্যাল ফোবিয়া মানে সামাজিক পরিস্থিতিতে ভয় লাগা বা অস্বস্তিবোধ করা। এটি সব মানুষেরই কমবেশি লাগতে পারে। তবে কেউ কেউ এতই অস্বস্তিবোধ করেন সামাজিক পরিবেশে, বিশেষ করে নতুন পরিবেশে বা অপরিচিত পরিবেশে তাঁরা ঘামতে থাকেন, অস্বস্তিবোধ করতে থাকেন, এমন ভয় তৈরি হয় নিজের ভেতর যে আস্তে আস্তে এগুলো এড়িয়ে যেতে পারেন। পরবর্তীকালে দেখা যায়, এই মানুষগুলো কোনো সামাজিক পরিস্থিতিতে যেতে চায় না। একলা একলা থাকে। তার যে যেতে ইচ্ছে নেই, সেটি নয়। তারও যেতে ইচ্ছে করে। তবে মনের ভেতর একটি খুঁতখুঁত ভাব থাকে। আমি হয়তো পারব না বা আমি যদি যাই, মানুষ হয়তো আমাকে দেখে হাসাহাসি করবে। বাকিরা কী ভাবছে? সারাক্ষণ তাঁর মনের ভেতর এসব চিন্তা হতে থাকে। এর জন্য তাঁর স্বাভাবিক কাজকর্ম সে ঠিকমতো করতে পারে না। খুবই কষ্টে থাকে।
প্রশ্ন : কী কারণে এই বিষয় হচ্ছে?
উত্তর : মূলত আমরা যেভাবে ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে ওঠি, আমরা চারপাশ থেকে শিখি। মানুষ কেমন, কে কেমনভাবে আচরণ করে? আমাকে দেখে মানুষ কী বলছে? এসব বিষয় সাধারণত শিখি। কারো জীবনযাপনে যদি এমন কিছু ঘটে, যেখানে সে কাউকে দেখেছে, কোনো একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে সে অপমানিত হয়েছে বা কেউ একজন স্টেজে গান গাইতে উঠল, সবাই তাকে বাজেভাবে বলল। তাঁর ভেতরেও ভয় ঢুকে যায়, আমি গেলে যদি এ রকম হয়। এ রকম অবস্থায় অনেকেই থাকে। তবে সবার সোশ্যাল ফোবিয়া হয় না।
প্রশ্ন : অনেকেই কিন্তু ওই ঘটনা দেখতে পারে। তবে সোশ্যাল ফোবিয়া হয় কেন?
উত্তর : কারো মধ্যে একটু অস্থিতিশীলতা থাকে। কারো কারো ব্যক্তিত্বের ধরন এমন যে একটু দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ধরনের। মনের মধ্যে সারাক্ষণ একটি খুঁতখুঁতে ভাব থাকে। তাঁরা বেশি প্রভাবিত হয়। তাঁদের দেখা যায়, সোশ্যাল ফোবিয়া হয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে তাঁদের এই সমস্যা তৈরি হয় এবং সামাজিক অনেক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েও হয়।