সোশ্যাল ফোবিয়া কমাতে করণীয়?
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/04/21/photo-1492773121.jpg)
সোশ্যাল ফোবিয়া কমাতে বিভিন্ন থেরাপি রয়েছে। এগুলো সমস্যা সমাধানে খুব ভালো কাজ করে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৭১৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন কামরুজ্জামান মজুমদার। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : এ জাতীয় সমস্যা নিয়ে রোগীরা আপনাদের কাছে এলে প্রাথমিকভাবে কী দেখেন রোগীর? কীভাবে পরামর্শ দেন?
উত্তর : আমরা মূলত বলি ফরমুলেশন। প্রত্যেক মানুষ আলাদা। একেকজনের সোশ্যাল ফোবিয়া একেক কারণ দিয়ে তৈরি হয়। দেখতে হবে যে কোন বিষয়টি তার মধ্যে এটি তৈরি করেছে। আমরা বলি, আপনার এটার কারণে এই এই সমস্যা হচ্ছে। তাঁকেই জিজ্ঞেস করি, এবার আপনি ভেবে দেখেন, এখানে কী করা যায়? তিনি খুবই ভালো বোঝেন। তিনি নিজেই বলেন, আমার মনে হয়, এই চিন্তা বা এই আচরণকে পরিবর্তন করা গেলে বিষয়টি ঠিক হবে। তখন আমরা তাঁকে সেভাবে কাজ করাই। যেমন থট চ্যালেঞ্জ বলে একটি পদ্ধতি আছে। আমি যে যাচ্ছি, মানুষজন হয়তো আমাকে দেখছে। তাঁর হয়তো রাস্তায় বের হলে মনে হয়, সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমরা বলি, চলেন বাইরে যাই। এবার দেখেন কয়জন আপনার দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যস্ত রাস্তায় কী হয়? আসলে কেউ তো তাকায় না। তার মনের ভুল এটি। তখন সে দেখে, আসলে কেউ তাকাচ্ছে না। এত দিন সে এটি খেয়াল করেনি। সে যেত এবং নিচের দিকে তাকিয়ে থাকত। এখন যখন গুনে দেখেন কেউ তাকাচ্ছে না, তখন তাঁর অভিজ্ঞতা বাড়ে। এরপর তিনি আস্তে আস্তে যান এবং তাঁর মনের জোর বাড়তে থাকে।
আরেক ধরনের ব্যায়াম আছে রিলাক্সেশন। এটি মেডিটেশনের অনেকটা কাছাকাছি। এটাও ব্যক্তির দুশ্চিন্তা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। সোশ্যাল ফোবিয়ার চিকিৎসা কিন্তু খুবই ভালো হয়। অনেকে বলেন, আমরা যদি জানতাম ভালো চিকিৎসা আছে, তাহলে আর এত দিন ভুগতাম না। তাই খুব দ্রুত এলে ভালো হয়।
প্রশ্ন : কত দিন ধরে থেরাপি চলতে থাকে? ভালো হচ্ছে যে সেটিই বা আপনারা বোঝেন কীভাবে?
উত্তর : আমাদের কিছু বিষয় আছে, সেগুলো দেখে আমরা বুঝি ভালো হলো কি না। ব্যক্তি নিজেই বুঝতে পারে যে ভালো হয়েছে কি না। এক ধরনের মাপকাঠি আছে। সেখানে দেখি যে আপনার সোশ্যাল ফোবিয়া কতটুকু? আমাদের প্রায় ১০ থেকে ১২ সপ্তাহ লাগে সম্পূর্ণ সেশনটা শেষ করতে। কারো একটু কম লাগে, কারো বেশি লাগে। ১০ সেশন পরে যখন বলি, এখন কী পর্যায়ে, তখন তিনি দেখতে পান, এখন কী অবস্থা রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, পরিবারের লোকজন খুব ভালো বুঝতে পারেন যে ব্যক্তিটির অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে।
প্রশ্ন : পরিবারের লোকদের প্রতি কি আপনাদেরও কিছু পরামর্শ থাকে?
উত্তর : অনেক সময় আমরা তাঁদের সঙ্গে নিই। তাঁকে যেন কোথাও যেতে গেলে সঙ্গে নেওয়া হয়, সেটি বলি। এতেও অনেক উপকার হয়।