চিকিৎসকদের পোশাক থেকে সংক্রমণ?
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/07/23/photo-1437637768.jpg)
চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীরা যদি বড় হাতা সাদা কোট বা অ্যাপ্রন না পরেন, তাহলে হাসপাতালে সংক্রমণের হার কমে যাবে। দ্য বিএমজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার বরাত দিয়ে এমন কথা জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ভারতের ম্যাঙ্গালুরুর ইয়েনিপইয়া মেডিকেল কলেজে গবেষণারত এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসক এডমন্ড ফার্নান্দেজ বলেন, ‘বড় হাতার সাদা কোট বা অ্যাপ্রন ইনফেকশন ছড়ায় এবং এতে রোগী স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ে।’ ফার্নান্দেজ তাই মনে করেন, ভারতীয় চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বড় হাতা সাদা কোট পরিধান বন্ধ করা প্রয়োজন। প্রতিটি হাসপাতালে সংক্রমণের বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য এবং এড়ানোর বিষয়ে কী করা যায়, সে বিষয়ক একটি কমিটি থাকা উচিত বলেও মনে করেন ফার্নান্দেজ। তাঁর পরামর্শ, সংক্রমণের হার হ্রাস করতে এবং সংক্রমণ-পরবর্তী খরচ কমাতে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি সহজ পন্থা অবলম্বন করতে পারে। সেটি হলো, চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের লম্বা হাতার পোশাকটি পরিধান নিষিদ্ধ করা।
উনিশ শতক থেকেই বড় হাতা এই পোশাক পরা চিকিৎসকদের একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। তবে পোশাকটিকেই এখন কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন গবেষক ফার্নান্দেজ। তিনি বলেন, ‘অনেক জুনিয়র চিকিৎসককে শপিংমল বা সিনেমা হলে এই অ্যাপ্রন পরে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এসব জায়গায়ও তাঁরা সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন।’
ফার্নান্দেজ আরো বলেন, ‘গবেষণায় আমরা পেয়েছি, এই পোশাক ব্যবহারের পর সপ্তাহে একদিন বা দুদিন পরিষ্কার করা হয়। এ কারণে পোশাকে জীবাণু থেকে যায়।’
২০০৭ সালে যুক্তরাজ্য এই বড় হাতা সাদা জামা পরা বন্ধ করে দেওয়ার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেয় এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন এই পোশাকের বিরুদ্ধে মামলা করে এর পরিধান বন্ধ করতে চায়। তবে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়, কারণ মার্কিন চিকিৎসকরা এই পোশাক ছাড়তে চাননি।
সাদা পোশাকটি নিছক একটা প্রতীক, এর সঙ্গে পেশাদারিত্বের কোনো সম্পর্ক নেই। চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে রোগীর সামনে নিজেকে গুছিয়ে উপস্থাপন করা এবং মুখে হাসি রাখা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ সাদা পোশাকের চেয়ে। পোশাকের বিকল্প হিসেবে চিকিৎসকদের নামে ব্যাজ তৈরি করা যেতে পারে বলে মনে করেন ফার্নান্দেজ।