অস্ত্রোপচারে অজ্ঞান করার আগে যেসব বিষয় দেখা হয়

অস্ত্রোপচারের আগে সাধারণত জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে অজ্ঞান করা হয়। তবে এই অজ্ঞান করার আগে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হয় চিকিৎসকদের।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০৯১তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া অ্যান্ড আইসিইউ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : একজন মানুষকে অজ্ঞান করার আগে কোন কোন বিষয় দেখে থাকেন? অনেক সময় মডারেট রিস্ক বা হাই রিস্ক হয়। এই বিষয়টি একটু বুঝিয়ে বলুন?
উত্তর : একজন স্বাভাবিক রোগীর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা লাগে না। আর যদি দেখি অল্প বয়সের, বেশি বয়সের রোগী যাদের রোগ রয়েছে, তাদের তখন ওই রোগ-সংক্রান্ত কিছু পরীক্ষা করতে হয়। এগুলো খুবই জরুরি। যেমন—একজন রোগী হয়তো পিত্তথলির অস্ত্রোপচার করতে আসছে, তার হার্টের রোগ রয়েছে। তাহলে পিত্তথলির কিছু নিয়ে অস্ত্রোপচারটা করতে পারবেন না। কিংবা ফুসফুসের রোগ রয়েছে, তার অ্যাজমা রয়েছে। ওই সম্পর্কিত নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষা করতে হয়। প্রথমত, রুটিন কিছু পরীক্ষা আমরা করি। সাধারণভাবে রক্ত পরীক্ষা, ইসিজি বা এক্স-রে এই জাতীয় পরীক্ষা করি হয়তো। এ ছাড়া অন্যান্য রোগ যেগুলো থাকে, সে অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। যেমন একজন রোগীর বয়স হয়তো হলো ৭০ বা ৮০ বছর, তার হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা দেখার জন্য একটা ইকো করা হয়।
প্রশ্ন : অ্যানেসথেসিওলজিস্টের কাছ থেকে রোগীর কী কী বিষয় জানা প্রয়োজন?
উত্তর : আমাদের দেশে এখনো আমরা বিষয়টি পেরে উঠিনি। যে রোগী সার্জারিতে যাক না কেন, এর আগে তার অ্যানেসথেসিওলজিস্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়া দরকার।
সাক্ষাতের এখানে একটি বিশাল অংশ রয়েছে। সেটি হলো তাকে পরামর্শ দেওয়া। তার ভেতরে যে ভয়ভীতি ও জানার আগ্রহ রয়েছে, সেগুলো তার সঙ্গে বসে বুঝিয়ে বলা। এই সুযোগগুলো বাংলাদেশের সব জায়গায় এখনো সম্ভব হয়নি। এরপরও যতটুকু সময়ের জন্য আমরা তাকে পাই, প্রশ্ন যেগুলো জানতে চায়, সেগুলোর উত্তর দিই। ঝুঁকি সম্পর্কেও যদি জানার আগ্রহ থাকে, লোকজনকেও যদি অনেক সময় বলতে হয়, সেগুলো বলে নিই। ভালো রকম কাউন্সেলিং করে এরপর তাকে সার্জারিতে নিয়ে যাই। অর্থাৎ রোগীকে তার অজ্ঞান করার ঝুঁকি বোঝানো এবং অনেকটা ভয়মুক্ত করা। সত্যিকার অর্থেই তার কী হতে যাচ্ছে, সেটি বোঝানো এগুলো করা হয়।