ক্যামোথেরাপি নিয়ে ভীতি?

ক্যানসারের চিকিৎসায় ক্যামোথেরাপি দেওয়া হয়। এটি এক ধরনের ওষুধ। তবে ক্যামোথেরাপির কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আর এই জন্য রোগীদের মধ্যে এটি নিয়ে অনেক সময় ভীতি কাজ করে।
ক্যামোথেরাপির ভীতির বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০৯৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আরমান রেজা চৌধুরী। বর্তমানে তিনি ডেলটা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : অনেক রোগীর ক্যামোথেরাপি নিয়ে ভীতি কাজ করে। আপনারা রোগীদের আশ্বস্ত করেন কীভাবে?
উত্তর : ক্যামোথেরাপি আসলে কঠিন রোগের, কঠিন চিকিৎসা। এই হিসেবে এই চিকিৎসার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। পার্শ্বপতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে ক্ষুধামান্দ্য, বমি বা বমির ভাব। ক্যামোথেরাপির কারণে অনেক সময় রক্ত কমে যায়। ডাব্লিউবিসি কমে যেতে পারে। আমাদের শ্বেত রক্তকণিকা কমে যেতে পারে, লোহিত রক্তকণিকা কমে যেতে পারে। এ সবের কারণে কিছু জটিলতা দেখা যায়। সাধারণত মানুষ যে জটিলতা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করে সেটি হলো, ক্যামোথেরাপির কারণে চুল পড়ে যাওয়া। এই ধরনের কিছু কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেমন, অবসাদগ্রস্ততা, এটাও ক্যামোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। এ ধরনের কিছু কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
ইদানীং অনেক ধরনের ওষুধ বের হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে ক্যামোথেরাপির বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াকে কমিয়ে রাখা যায়। অত বেশি হয়তো ক্যামোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পায় না। আর কিছু কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে, যেগুলো ক্যামোথেরাপির কারণে প্রত্যেকটা রোগীর হয়ে থাকে। সেগুলো সময় যেতে যেতে হয়তো কারো ক্ষেত্রে ঠিক হয়। আবার কারো ক্ষেত্রে হয়তো স্থায়ী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে থেকে যায়।
প্রশ্ন : পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াকে দূর করার জন্য কী করে থাকেন?
উত্তর : প্রধাণত যেসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াকে ওষুধের মাধ্যমে ঠিক করা সম্ভব, সেগুলোকে আমরা রোগীদের চিকিৎসাপত্রে দেই। পাশাপাশি ক্যামোথেরাপি শুরু হওয়ার আগেই আমরা তাদের আস্বস্ত করি। বলে দিই যে চিকিৎসা নিলে এই ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। রোগী যদি আগে থেকেই জানে যে তার এই এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো হতে পারে, তাহলে কিন্তু এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার হারও রোগীর মধ্যে কমে যায়। তাহলে এই চিকিৎসাকে মেনে নেওয়ার একটি প্রবণতা তার মধ্যে তৈরি হয়। রোগের চিকিৎসা তো এটাই যে ক্যামোথেরাপি নিতে হবে। এখন যদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ভয়ে সে ক্যানসারের চিকিৎসা গ্রহণ না করে, তাহলে দিন দিন রোগটা তার আরো খারাপের দিকে যাবে। সে জন্য তাকে বলার চেষ্টা করি যে কিছুটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মেনে নিতে হলেও চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।