পাইলস হলে অস্ত্রোপচার কখন করতে হয়?

পাইলসের চিকিৎসায় অনেক সময় অস্ত্রোপচার করা লাগে। তবে কখন এই অস্ত্রোপচার করতে হয়, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১৮১তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আফরিন সুলতানা।
বর্তমানে তিনি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সিটি হাসপাতাল লিমিটেডের সার্জারি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : পাইলসের ক্ষেত্রে কখন অস্ত্রোপচার করতে হবে?
উত্তর : আসলে এ ধরনের রোগীদের কিছু প্রশ্ন খুব প্রচলিত থাকে। একটি হলো আমার এই রোগটি অস্ত্রোপচার ছাড়া ঠিক করা যাবে কি না। সবারই এই প্রশ্ন থাকে, এটি সার্জারি ছাড়া ঠিক করা সম্ভব কি না।
আর আরেকটি প্রশ্ন হলো যদি সার্জারি করতেই হয়, সেই ক্ষেত্রে এটি আবার হবে কি না। প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিই। সাধারণত প্রথম ডিগ্রি পাইলস যখন থাকে তখন সাধারণত কখনো সার্জারির জন্য পরামর্শ দেওয়া হয় না।
আরো একটি বিষয় বলি, কোষ্ঠকাঠিন্যের সঙ্গে পাইলসের সম্পর্ক রয়েছে। এনাল ফিসারের জন্য যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য দায়ী। তেমনি কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য পাইলস আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। প্রাথমিক দিকে যখন আমাদের কাছে আসে, তখন দুটো ধাপ থাকে, একটি হলো তার জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করা। কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সেজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা। শাকসবজি খাওয়া, দরকার হলে ইসবগুলের ভূসি খাওয়া।
যেহেতু কোষ্ঠকাঠিন্য একটি বড় কারণ, তাই কোষ্ঠকাঠিন্যকেই আগে দূর করতে হবে। এই রোগটাকে যা বাড়াচ্ছে, সেটিকে আগে কমাতে হবে। এই রোগটির জন্য আমরা কিছু ওষুধ দিই। চিকিৎসা দিই। এরপর যখন দ্বিতীয় ডিগ্রিতে আসে, সেই ক্ষেত্রেও আমরা ওষুধপত্র দিই। বাকি পরামর্শ দিই। তখন কাটাছেঁড়া ছাড়াও এই রোগীর চিকিৎসা দেওয়া যায়। আমরা একটি পদ্ধতি ব্যবহার করি, যাকে বলা হয় ব্যান্ডি। রাবার ব্যান্ডের মতো একটি জিনিস রক্তনালীর টিউমারের মধ্যে পরিয়ে দেওয়া হয়। সেটা আপনা আপনি শুকিয়ে ঝড়ে যায়। এর জন্য কোনো কাটাছেঁড়া করতে হয় না। এর চাইতে যখন আরো বেড়ে যায়, যখন তৃতীয় ডিগ্রি বা চার ডিগ্রিতে চলে যায়, তখন আমাদের সার্জারির দিকে যেতে হয়।
প্রশ্ন : সার্জারিতে কি যেতেই হয়?
উত্তর : যাদের তৃতীয় ডিগ্রি, চার ডিগ্রি হয়েই গেছে, তাদের ক্ষেত্রে সার্জারিতে যেতেই হয়। তবে অনেকেই জানেন এই অস্ত্রোপচারের কথা। আমাদের মলদ্বারের কাছে খুব বেশি কাটাছেঁড়া করতে হয় না। মেশিনের মাধ্যমে সার্জারিটা করে দিই। আগে যখন এই সার্জারিটা করা হতো, হয়তো অনেক সময় মাসখানেকও থেকে যেতে হতো। এখন এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে সাধারণত এক থেকে দুই দিনের মধ্যে রোগীরা বাসায় ফিরে যেতে পারেন। আগে যখন এ অস্ত্রোপচারগুলো কাটাছেঁড়া করে করা হতো, তখন কিন্তু রোগীদের খুব ব্যথা হতো। রস ঝড়ত, বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা হতো। এখন মেশিনের সাহায্যে এই অস্ত্রোপচারগুলোতে এই সমস্যাগুলো হয় না।